সফর: যাঁর ভরসায় এই ভিড়, সেই মুখ্যমন্ত্রী হাঁটছেন দার্জিলিঙের পথে। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন থেকে এনজেপি-তে নেমেছিলাম সকাল দশটার একটু পরে। তখনও ভাবতে পারিনি, দার্জিলিং পৌঁছতে বিকেল হয়ে যাবে!
কার্শিয়াং পর্যন্ত বিশেষ সমস্যা হয়নি। রোহিনী দিয়ে উঠেছি তরতর করেই। কিন্তু প্রথম গোলটা বাঁধল তার পরে। কার্শিয়াঙের আগে হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল গাড়ি। কার্শিয়াঙে শহরের ভিতরকার রাস্তা এমনিতেই বিশেষ চওড়া নয়। তার উপরে গাড়ির লাইন। পঁয়তাল্লিশ মিনিট গাড়ি এগোল খুব ধীর গতিতে। সেই জট অবশ্য খুলে গেল এক সময়ে। ফের মসৃণ গতি ফিরে এলো গাড়িতে।
কিন্তু আসল ধাক্কাটা বাকি ছিল তখনও। ঘুমের কাছে এসে একেবারে ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড়।
আরও পড়ুন: পরমবীর প্রাচীর ঘিরে দ্বন্দ্ব, প্রশ্নের মুখে রাজ্যপাল
সেই যে গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল, একেবারে নট নরনচরণ। বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে নেমে সামনে তাকাতেই চোখ কপালে, কাতারে কাতারে গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে লাইন দিয়ে। পিছনেও তখন বেড়ে গিয়েছে লাইন। সব মিলিয়ে সে এক দুর্বিষহ দশা।
এর মধ্যে উল্টো দিক থেকে মাঝেমাঝেই মোর্চার পতাকা লাগানো গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। কোনও গাড়িতে আবার কালো পতাকা। আর আমাদের গাড়ি এগোচ্ছে একেবারে শামুকের গতিতে। পনেরো-কুড়ি মিনিটে এক মিনিটের পথ। এর মধ্যে আশপাশের গাড়ির কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, এই ভরা মরসুমে মুখ্যমন্ত্রী আসার ফলেই যত গোলমাল। তিনি না এলে গুরুঙ্গ এত সব আন্দোলন করতেন না। এর উল্টো কথাও বলছিলেন কেউ কেউ। তাঁদের বক্তব্য, বরং মুখ্যমন্ত্রী আছেন বলেই বড় কিছু ঘটছে না। তিনি পাহাড়ে থাকা মানে তত দিন পর্যটকেরা নিরাপদ।
এই সব বিতর্ক, ধুলো, কখনও গরম কখনও মেঘ আর দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে আমাদের গাড়ি দার্জিলিং পৌঁছল যখন পাহাড়ের পিছনে সূর্য মুখ লুকিয়েছে। আধ ঘণ্টার পথ আসতে লাগল আড়াই ঘণ্টা!