বিক্ষোভ: হাসপাতালে রোগীর পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল থেকে মৃতদেহের চোখ উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল ডুয়ার্সের বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল থেকে। বুধবার এই নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ল পরিবার ও প্রতিবেশীরা। বিক্ষোভ চলে দুপুর পর্যন্ত। বিক্ষোভ সামাল দিতে ছুটে আসে পুলিশ। পরে মৃত দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার পাঠানো হয়। তাঁদের দাবি, কী ভাবে মৃতদেহ থেকে চোখ উধাও হয়ে গেল তার জবাব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। হাসপাতালে যার উদাসীনতায় এমন ঘটল তাঁকে শাস্তি দিতে হবে।
মঙ্গলবার বীরপাড়া ফালাকাটা সড়কে দলগাঁও চা বাগান এলাকার শালঝোড়ায় একটি পিকআপ ভ্যান ও একটি ছোট মালবাহী গাড়ির সংঘর্ষ হলে ছোট গাড়ির চালক ইন্দ্রজিৎ বর্মন(২৮) গুরুতর ভাবে আহত হয়। তাঁকে প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে পাঠান চিকিৎসকরা। রাস্তায় চালকের মৃত্যু হলে চালককে ফের বীরপাড়া হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে আসে সঙ্গে থাকা অন্য চালকরা। রাতে হাসপাতালে থাকার পর সকালে আলিপুরদুয়ার নিয়ে দেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য বের করলে রোগীর আত্মীয় পরিজনরা দেখেন মৃতদেহের চোখ নেই। তাই নিয়ে শুরু হয় চিকিৎসকদের সঙ্গে বচসা।
মৃত চালকের দাদা বিশ্বজিৎ বর্মন বলেন, “ভাইয়ের মৃতদেহ দেহ থেকে চোখ কী হল, তা চিকিৎসকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, চোখ ইঁদুরে খুবলে নিয়েছে।” বিশ্বজিৎবাবুর আরও অভিযোগ, “দু’টি চোখই ইঁদুর বা কেউ খুবলে তুলে নিয়েছে? যে একটি চোখ আছে দেখা যাচ্ছে সেটিও নকল চোখ। কেন এমন হল, তার সঠিক তদন্তের জন্য হাসপাতালের বিরুদ্ধে পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।”
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় আহত চালকের সঙ্গে ছিলেন যে চালকরা হেমন্ত রায় ও বাবলু বর্মনরা বলেন, “ কাল রাতে যখন আমরা মৃত দেহ হাসপাতালে রেখে যাই তখন দুটি চোখই ঠিক ছিল। ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখি একটি চোখ উধাও। আমাদের সন্দেহ দুটি চোখই খুবলে তুলে নেওয়া হয়েছে। যে চোখটি আছে সেটি নকল চোখ বসানো।”
বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের সুপার সৌম্যজিৎ পুরকায়েত বলেন, “আমাদের হাসপাতালে মৃতদেহ রাখার মর্গ নেই। হাসপাতালের একটি ঘরে কাঠের বাক্সে মৃতদেহ বরফ দিয়ে ঘর তালা বন্ধ করে রাখা হয়। সকালে ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘর খোলা হয়। রাতে ইঁদুর বা কোন কিছুতে একটি চোখ খুবলে নিয়েছে। মর্গ না থাকলে কী করব? তবে হাসপাতালে মর্গ তৈরির জন্য দীর্ঘ দিন আগেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ”