ফের তোলাবাজির নালিশ, ধৃত দুই

ফাঁসিদেওয়ার পরে এ বার রাজগঞ্জ ব্লকের বলরাম। ফের উঠল ‘সিন্ডিকেট’-এর হুমকির অভিযোগ। এক ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তার কারখানার নির্মাণ কাজ বন্ধ হতে বসেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৪১
Share:

ফাঁসিদেওয়ার পরে এ বার রাজগঞ্জ ব্লকের বলরাম। ফের উঠল ‘সিন্ডিকেট’-এর হুমকির অভিযোগ। এক ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তার কারখানার নির্মাণ কাজ বন্ধ হতে বসেছিল। ওই যুবকদের ঠিক করা দরে বালি-পাথর, মেশিনপত্র না নেওয়ায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসা ট্রাক আটকে চালককে মারধর করার অভিযোগও উঠেছে। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মালিকপক্ষ। ওই রাতেই অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে হুমকি, তোলাবাজির অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়। সোমবার অভিযুক্ত লোকমান গনি ও আজিজার রহমানকে জলপাইগুড়ি আদালত সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে।

Advertisement

বলরাম রোডের সাত বিঘা জমি কিনে প্রায় ২৫ কোটি টাকা লগ্নি করেছেন শহরের ব্যবসায়ী অনুপ আগরওয়াল। তিনি ব্যবসায়ী সংগঠন নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ। এক বছরের বেশি সময় ধরে তাঁর চালকলের কাজ চলছে। ৮০ শতাংশ কাজও হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। কাজ করছেন একশোরও বেশি শ্রমিক। এরমধ্যে ২০ জন বলরাম এলাকার। বাকিরা শিলিগুড়ি, বধর্মান এবং দিল্লির। অনুপবাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রথম থেকে গোলমাল চাইনি বলে ৪-৫ শতাংশ বেশি দামেও ওদের থেকেই মালপত্র কিনেছি। এখন আরও টাকা চাইছে। যন্ত্রও ওদের থেকে নিতে হবে বলছে। আবার চাহিদামত মালপত্র দিতে পারছে না। তাই বাইরে থেকে সামগ্রী আনতেই এরা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।’’

তিনি জানান, এলাকার বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বিজয় দাসকে ঘটনার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। পাঁচটি গাড়ি আটকানো হয়েছে, চালককে মারা হয়েছে বলেও জানান তিনি। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের কাছ থেকে রোজ কুড়ি টাকা করে তোলা হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। অনুপবাবু বলেন, ‘‘বাধ্য হয়েই পুলিশে গিয়েছি।’’ যদিও তৃণমূল সদস্য বিজয় দাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দামের ফারাকের বিষয় জানি না। আমি সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। ওই ছেলেরা রাতে ট্রাকে মালপত্র ফেলে। মালিক নিজের মতো করে রাতে নির্মাণসামগ্রী আনা শুরু করেন। যুবকেরা বাধা দেয় এটা ঠিক। এটাই গোলমাল। সিন্ডিকেট নেই।’’

Advertisement

অভিযোগ: পুলিশকে দেওয়া অভিযোগ পত্র। নিজস্ব চিত্র

মালিকপক্ষের অভিযোগ, শাসক দলের কিছু স্থানীয় নেতাদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদতেই ওই যুবকেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি সফরে এসে জমির কারবারি, তোলাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনকে কড়া হতে নির্দেশ দিয়ে যান। তার পরে লোকজন চুপচাপ হয়ে গেলেও সম্প্রতি অভিযুক্তরা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা বলেছেন, ‘‘সিন্ডিকেট গড়ে তোলাবাজি, হুমকি এসব কমিশনারেট এলাকায় চলবে না। অভিযুক্ত যারাই হোক গ্রেফতার করা হবে। দুই জন গ্রেফতার হয়েছে। আরও একজনকে খোঁজা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন