পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলা করার সময় তা ফেটে গুরুতর জখম হয়েছে দুই বালক। মালদহের চাঁচল থানার জালালপুরে সোমবার দুপুরে ওই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পরেই রক্তাক্ত দুই বালককে প্রথমে মালতিপুর হাসপাতালে ও সেখান থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ভরদুপুরে ওই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সেই সঙ্গে ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রংও। ঘটনাটি ঘটেছে এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়ির পাশে। ফলে, এলাকায় অশান্তি ছড়াতে বোমা তৈরি করে এক বাসিন্দার পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। কংগ্রেস সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারা কী উদ্দেশ্যে ওই বোমা রেখেছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোমায় জখম সাত ও নয় বছরের দুই বালকের নাম শেখ আসির ও মহম্মদ লাল্টু। আসিরের বাবা মহম্মদ বাসির ও লাল্টুর বাবা আতাউর রহমান সম্পর্কে খুড়তুতো ভাই। তাদের পাশাপাশি বাড়ি। তাদের বাড়ির পাশেই এক বাসিন্দার পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে এদিন দুজনে লুকোচুরি খেলছিল। ওই বাড়ির মালিক এক শিক্ষক। দীর্ঘদিন ধরেই তারা অন্যত্র থাকেন। ফলে বাড়ির পাশাপাশি গোয়ালঘরটিও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দুপুরে আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। তার পর গোয়ালঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই বালককে উদ্ধার করা হয়। তাদের শরীরের অনেক বহু জায়গায় ঝলসে গিয়েছে।
ওই এলাকা থেকে একাধিকবার বোমা উদ্ধার ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলির আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মধ্যে বোমাবাজির ঘটনা জালালপুর এলাকায় নতুন কিছু নয়। এলাকা দখলকে ঘিরে মাস তিনেক আগেও বোমাবাজির ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। একশ্রেণির দুষ্কৃতী এলাকায় বোমা তৈরি করে তা অন্যত্র সরবরাহের ব্যবসাও করে বলেও অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূলের কার্য়করী সভাপতি ইমদাদুল হকের অভিযোগ, ‘‘এলাকায় সন্ত্রাস করে কংগ্রেসের লোকেরা এলাকা দখলে রাখতে চাইছে। কংগ্রেস কর্মীরাই ওখানে বোমা রেখেছিল।’’ যদিও চাঁচল-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সৈয়দ মানজারুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাসির কংগ্রেসকর্মী। কিন্তু পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে বোমা ফেটেছে। বাসির বা কংগ্রেস কর্মীরা বোমা রাখলে তো ওরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের সাবধান করে দিত। কারা ওই বোমা রেখেছিল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’