চিকিৎসক গরহাজির, ওটি থেকে ফেরত দুই

আগের দিন রাতে জানানো হয়েছিল যে অস্ত্রোপচার হবে। সেই নির্দেশ মতো বেলা দশটায় অপারেশন থিয়েটারে পৌঁছে গিয়েছিলেন দুই রোগীই। সেখানে পোশাক পরিয়ে তাঁদেরকে তৈরি করা হয়।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

আগের দিন রাতে জানানো হয়েছিল যে অস্ত্রোপচার হবে। সেই নির্দেশ মতো বেলা দশটায় অপারেশন থিয়েটারে পৌঁছে গিয়েছিলেন দুই রোগীই। সেখানে পোশাক পরিয়ে তাঁদেরকে তৈরি করা হয়। কিন্তু, তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পরে বেলা ১টা নাগাদ তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, চিকিৎসক গরহাজির থাকায় অস্ত্রোপচার হবে না। শুক্রবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঘটনা।

Advertisement

যে দু’জনকে এ দিন ওয়ার্ডে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের অভিযোগ, এরকম ঘটনা তাঁর সঙ্গে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য ঘটলো। হাসপাতাল সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত ঘটনা। তবে অনিবার্য কারণে এমন হয়েছে। একজন চিকিৎসক জরুরি কারণে পৌঁছতে না পারায় সমস্যা হয়। তবে আগামী সপ্তাহেই যাতে দু’জনের অস্ত্রোপচার হয় সেই ব্যবস্থা করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই রোগী হলেন রশিদুল আলম ও পার্থ বিশ্বাস। নাগরাকাটার বাসিন্দা রশিদুল বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। গত ২৬ নভেম্বর সেখানে দোতলা থেকে পড়ে তাঁর কনুই ভেঙে যায়। সেখানে টাকা ও ভাষার সমস্যায় চিকিৎসা করাননি। ডিসেম্বরের গোড়ায় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। সেই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁর অস্ত্রোপচার করার তারিখ দেওয়া হয়। রশিদুলের অভিযোগ, ‘‘ওটিতে গিয়ে অনেকেক্ষণ অপেক্ষার পরে সে দিনও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরে শুক্রবারও ফেরানো হল। অতদূর থেকে বাড়ির লোক বারবার আসতে পারে? খরচ আছে না!’’

Advertisement

দশম শ্রেণির পড়ুয়া পার্থের বাড়ি খড়িবাড়ির বাতাসিতে। তাঁর পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। গত মাসে মেডিক্যাল কলেজেই অস্ত্রোপচার হয়েছে। সেখানে যে নাট-বোল্ট লাগানো হয়েছিল তা খোলার জন্য এ দিন পার্থকে ওয়ার্ড থেকে ওটিতে আনা হয়। পার্থের বাড়ির লোকও সকালেই মেডিক্যালে হাজির হন। কিন্তু, দুপুরে দু’জনকে জানানো হয়, ওটিতে চিকিৎসকের অভাব দেখা দেওয়ায় অস্ত্রোপচার হবে না। পার্থ বলেন, ‘‘সামনে আমার মাধ্যমিক। তাড়াতাড়ি অপারেশন হলে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেতাম।’’

কেন এমন হয়রানি?

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থি-শল্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু, যে ‘টিম’ নিয়ে তিনি কাজ করেন, তাঁদের একজন চিকিৎসক গরহাজির হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু, ওই চিকিৎসক থাকবেন বলে জানানোয় অস্ত্রোপচারের দিনক্ষণ রোগীদের দেওয়া হয়েছিল বলে সূত্রটি জানিয়েছে। রোগী ফেরতের কথা শুনে ক্ষোভ ছড়ায় বাড়ির লোকের মধ্যে। তখন তাঁদের সুপারের ঘরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও সুপারকে না পেয়ে তাঁরা ডেপুটি সুপারের ঘরে যান। ওটির পোশাক পরা, কপালে টিকিট সাঁটানো দুই রোগীকে দেখে ডেপুটি চমকে যান। তিনি ওটিতে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপের পরামর্শ দেন।

ইতিমধ্যে সুপারের সঙ্গে রোগীদের দেখা হয়। সুপারের হস্তক্ষেপে রশিদুলকে আগামী সোমবার ও পার্থকে বুধবার অস্ত্রোপচারের দিন দেওয়া হয়েছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন