নিয়োগে ছ’মাস দিল ইউজিসি, প্রক্রিয়া শুরু উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে

ইউজিসির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। নির্দেশিকা অনুসারে চলতি মাসেই শূন্যপদ চিহ্নিত করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলিকে।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৯ ০৬:৫১
Share:

শূন্যপদ পূরণে ৬ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

ছ’মাসের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে শিক্ষকদের সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নির্ধারিত সময়ে নিয়োগ না হলে তাদের দেওয়া যাবতীয় অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে ইউজিসি। সপ্তাহখানেক আগেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেই ইউজিসি সূত্রে জানা গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই উত্তরবঙ্গের পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে নিয়োগের তোড়জোড়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০টির বেশি শিক্ষকের স্বীকৃত শূন্যপদ আছে। কী ভাবে নিয়োগ হবে, তার সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিও উল্লেখ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে নির্দিষ্ট সময়ে নিয়োগ শেষ করা বাস্তবে সম্ভব কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাই।

Advertisement

ইউজিসির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। নির্দেশিকা অনুসারে চলতি মাসেই শূন্যপদ চিহ্নিত করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলিকে। ২০ জুনের মধ্যে শূন্যপদের বিস্তারিত বিবরণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দিষ্ট ওয়েব পোর্টালেও নথিভুক্ত করতে হবে। ছ’মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দিয়ে দিতে হবে নিয়োগপত্র। কোনও মাসে কী কাজ শেষ করতে হবে, সেটাও নির্দিষ্টভাবে বলেছে ইউজিসি। উত্তরবঙ্গ, রায়গঞ্জ, গৌড়বঙ্গ, উত্তরবঙ্গ কৃষি ও কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা— এই পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতেও ইউজিসির নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। সূত্রের খবর, কলেজগুলিতে তিনশোরও বেশি শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও শিক্ষকের প্রায় ৩৬টি শূন্যপদ আছে। উত্তরবঙ্গে সব থেকে বেশি শূন্যপদ আছে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি জানিয়েছেন, তাদের শূন্যপদ ৭০। উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্যপদ আছে প্রায় ৫৯টি। পঞ্চানন বর্মায় সেই সংখ্যা ১২ এবং গৌড়বঙ্গে ৩৫।

ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের একাংশের অভিযোগ, শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে সমস্যা। চিরন্তনবাবু বলেন, ‘‘শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ হলে পড়াশোনা ও গবেষণার অনেক সমস্যা সত্যিই মিটে যাবে।’’

Advertisement

ইউজিসির অনুদান ছাড়া বাস্তবে উচ্চশিক্ষা পরিচালনা করা যে সম্ভব নয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কোনও কারণে সেই অনুদান বন্ধ হয়ে গেলে মহাসমস্যায় পড়তে হবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে। ফলে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তাঁরা। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইউজিসির নির্দেশিকা পেয়েছি। তবে আমাদের শূন্যপদগুলিতে ইতিমধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ রায়গঞ্জের উপাচার্য বলেন, ‘‘ইউজিসির নির্দেশিকা মেনেই নিয়োগ হবে। আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’’ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘ইউজিসি তাদের নির্দেশিকায় নিয়োগের বিস্তারিত পদ্ধতির উল্লেখ করে দিয়েছে। সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই কাজ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন