পাহারা: শিলিগুড়ি কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
নতুন নির্দেশিকায় জটিলতা তো আরও বাড়ল। কতদিন আর ভর্তি চলবে স্যার?
সরকারি নির্দেশ। আমাদের সমস্যা কেউ বুঝবে না।
সরকারি নির্দেশ তো পড়লাম। ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে ঠিক ভাবে কিছুই তো বলা নেই।
আমিও চিন্তায় পড়েছি কীভাবে কাজ করব তা নিয়ে।
পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাহলে।
এই কথপোকথন শিলিগুড়ির একটি কলেজের শিক্ষক ও অধ্যক্ষের। আসন খালি পরে থাকায় বুধবার নির্দেশিকা জারি করে কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ২০ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। সেই নির্দেশিকা দেখার পরে ধোঁয়াশা যে ক্রমেই বাড়ছে তা স্পষ্ট হয়েছে ওই কথপোকথনে। শিলিগুড়ির প্রায় প্রতিটি কলেজেই অনেক আসন এখনও ফাঁকা রয়েছে। নতুন নির্দেশিকার পরে সেই আসন কিভাবে পূরণ হবে সেই প্রশ্ন যেমন রয়েছে তেমনই দেরিতে ভর্তি হলে ক্রেডিট বেসড চয়েসড সিস্টেম ব্যবস্থা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা।
চিন্তা: ভর্তি নিয়ে চিন্তায় পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
সব মিলিয়ে প্রশাসনিক কাজ ও শিক্ষা প্রদান দু’টি প্রক্রিয়ায় অনেকটা পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। বাগডোগরা কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘‘ভর্তি শেষ না হওয়ায় আমরা এখনও ক্লাস শুরু করিনি। কিছু ছাত্র-ছাত্রী এখন থেকে ক্লাস করলে যারা পরে ভর্তি হবে তারা বঞ্চিত হবে। তাই সবটা দেখে কিছুদিন পর থেকেই ক্লাস শুরু করব।’’ যদিও শিলিগুড়ির কয়েকটি কলেজে ইতিমধ্যেই ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সমস্ত কলেজে অভিন্ন সময় ও প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। আর বাস্তব পরিস্থিতি বলছে পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে এক এক রকম কলেজে এক এক রকম নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি কলেজে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৮৫০০-র বেশি। ৩ জুলাই শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা জারির আগেই আবেদনকারীদের বেশিরভাগের নথি যাচাই হয়ে গিয়েছিল। যারা নথি যাচাইতে অংশ নিয়েছিল তাদের মধ্য থেকেই মেধা তালিকা তৈরি করে ভর্তি হয়েছে। যারা একবার ভর্তি হতে পারেনি তারা দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ পাবে না বলেই জানান কলেজের অধ্যক্ষ। আবার মেধা তালিকাতে নাম থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে অনেকে কাউন্সিলিংয়ে উপস্থিত থাকতে না পারায় ভর্তি হতে পারেনি। যারা ভর্তি হতে পারেনি তারা নতুন করে ফের ভর্তির সুযোগ পাবে কিনা তা নিয়ে এ বার নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়নি।
নতুন করে ভর্তির জন্য আবেদন করতে বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে কিনা সেটাও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না কেউ। শিলিগুড়ি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুব্রত দেবনাথ বলেন, ‘‘আগে ভাল করে বুঝে নিতে হবে সবটা। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিতে হলে দেওয়া হবে। আমরা পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘ভর্তির ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ কিছু করার নেই। আমরা সরকারি নির্দেশিকা কলেজগুলিতে পাঠিয়ে দেব। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার
কলেজের পরিচালন সমিতিকেই নিতে হবে।’’
কোথায় ধোঁয়াশা
•বর্ধিত তারিখে কারা পাবে ভর্তির সুযোগ?
•নথি যাচাই হয়েছে অথচ ভর্তি হতে পারেননি এমন কেউ কি ফের সুযোগ পাবেন?
•নতুন করে কি অনলাইনে ভর্তির নোটিশ দেওয়া হবে ?
•কলেজগুলিতে কত আসনে এখনও খালি রয়েছে?
•ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে কখন শুরু হবে ক্লাস?
•ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন শেষ হবে কবে?
•দেরিতে ভর্তি হলে উপস্থিতির জন্য বরাদ্দ ক্রেডিট পাবেন কি ছাত্র-ছাত্রীরা?
•গোটা প্রক্রিয়ায় দেরির জন্য ভাঙবে না তো ইউজিসি-র নিয়ম?