Tea Garden

কোন প্রকল্প থেকে লাভ চা-শিল্পের, খোঁজ তা নিয়েই

বাগানের মালিকেরা মনে করছেন, অসম, কেরল থেকে শুরু করে দার্জিলিঙের চা দেশের তো বটেই, বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নিয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৯
Share:

চা বাগানে কর্মরত এক কর্মী। — ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় বাজেটে চা শিল্প নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কোনও ঘোষণা না থাকায় অনেকটাই অবাক চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতেরা। সোমবারের বাজেটের ২৪ ঘণ্টা পরে, মঙ্গলবারেও তাই চা শিল্পে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা, বিতর্ক। সরাসরি কোনও প্রকল্প, বিদেশের বাজার বাড়ানোর পরিকল্পনা, সারে ভর্তুকি বা প্যাকেজ, আর্থিক অনুদানের কোনও ঘোষণা তো নেই, উল্টে, গত বারের এক হাজার কোটির ‘প্যাকেজ’ কোথায় গেল সে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে৷ আপাতত ‘ইউনিটি মল’, আবাস যোজনা, ‘জলজীবন’-এর মতো প্রকল্পে চা বাগানের কিছু পরিকাঠামোগত কাজের আশায় চা শিল্পের জড়িতেরা৷

Advertisement

‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর (টাই) সেক্রেটারি জেনারেল পিকে ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘এই আর্থিক বছরে চা শিল্পের জন্য আমরা কিছুই দেখলাম না। বাজেটে সামাজিক পরিকাঠামোগত দিকে বেশি নজর দেওয়ার কথা মনে হচ্ছে। তাতে আবাস, পানীয় জলের মতো প্রকল্প বাগানে রাজ্য সরকারের মাধ্যমেই করতে হবে।’’

বাগানের মালিকেরা মনে করছেন, অসম, কেরল থেকে শুরু করে দার্জিলিঙের চা দেশের তো বটেই, বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নিয়েছে। সেখানে ‘এক জেলা এক পণ্য’ দার্জিলিং চায়ের ‘ব্র্যান্ডিং’ বাড়াতে সাহায্য করলেও, প্রচারের মাত্রা নিয়ে কথা নেই। বিশেষ করে, ভারতীয় চা-কে আরও বেশি করে বিশ্বের বিভিন্ন ‘এক্সপো’, প্রচারে তুলে ধরাট, জরুরি ছিল যা নিয়ে কোনও দিশা নেই। দার্জিলিঙের অতি পরিচিত মুখ তথা এক চা গোষ্ঠীর কর্ণধার মাধব সারদা বলেছেন, ‘‘ইউনিটি মলের প্রকল্প ভাল। ‘এক জেলা এক পণ্য’র প্রকল্পকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এতে চা শিল্পের কিছু লাভ হতে পারে। তবে সরকারি সাহায্যে বিশ্ববাজারে ভারতীয় চায়ের প্রচার ও ব্র্যান্ডিং-র কাজটা জরুরি ছিল। এতে চায়ের রফতানিতে আরও গতি আসতে পারত।’’

Advertisement

চা মালিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িতেরা জানাচ্ছেন, এ বারের বাজেটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশেষ পরিকাঠামো প্রকল্পের জন্য ২,৪৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গত আর্থিক বছরে যা ছিল ১,২৩৩ কোটি টাকা। এই টাকার অধিকাংশই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট ছোট রাজ্যগুলির সীমান্ত সুরক্ষার দিকে নজর রেখে পরিকাঠামো তৈরি কাজ হয়। চিনের আগ্রাসী মনোভাবের জন্য এই বরাদ্দ বাড়লেও, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা বাগিচা ক্ষেত্রের পরিকাঠামোর কিছু কাজ এই বরাদ্দ থেকে হতে পারেই। সেখানে রাস্তা, আবাস, পানীয় জল, বিদ্যুৎ পরিষেবার দিক রয়েছে। ‘টাই’-এর তরফে উত্তরবঙ্গের সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘সরাসরি চা শিল্পের জন্য কিছু নেই বাজেটে। সেখানে অন্য বরাদ্দ বা পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে বাগানের কী কাজ হতে পারে তাই নিয়েই আলোচনা চলছে।’’

এই পরিস্থিতিকে কটাক্ষ করে গত বাজেটের এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের খোঁজ শুরু করেছেন শাসক দলের চা সংগঠনের নেতারা। দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি নির্জ্জল দে বলেন, ‘‘আলো নিয়ে আমরা এক হাজার কোটি খুঁজছি। মিথ্যা আর ভাঁওতাবাজির একটা সীমা রয়েছে। চা শিল্প বা উত্তরবঙ্গ নিয়ে এরা ভাবেই না। শুধু ভোট হলেই হল।’’ যদিও দেশের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজের প্রভাব সব শিল্পেই পড়বে বলে মনে করছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন