এক চা শ্রমিক নেতাকে বরখাস্ত করায় বিকেল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ত্রিহানা বাগান। ম্যানেজার-সহ অন্য এক আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের একদল সদস্যের বিরুদ্ধে। বাগানের অফিসে ভাঙচুর করা হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও চলার পর বরখাস্তের নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়। তারপরে ঘেরাও ওঠে। এরপরেই বাগানের অন্য দু’টি ডিভিশন থেকে কর্মী-আধিকারিকদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের একাংশের আশঙ্কা ফের বন্ধ হতে চলেছে ত্রিহানা চা বাগান।
মঙ্গলবার বিকাল থেকে নকশালবাড়ি ব্লকের ত্রিহানা চা বাগানে গোলমাল শুরু হয়। প্রথমে বচসা, ঘেরাও শুরু হয়। তার পরে ম্যানেজার-সহ আরেক আধিকারিককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সন্ধ্যার পর বাগানের কয়েকশো শ্রমিক দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বাগডোগরা থানা থেকে পুলিশ গেলেও তাদেরও ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। পৌঁছান ডিসি (ওয়েস্ট) সংমিত লেপচাও। রাত পর্যন্ত ঘেরাও চলে।
ডিসি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সামাল দিতে বিরাট পুলিশ বাহিনী বাগানে পাঠানো হয়।’’ গত ৮ নভেম্বর ত্রিহানা বাগান ছেড়ে চলে যান কর্তৃপক্ষ। এরপর দুই মাস বাগানটি বন্ধ ছিল। কয়েক দফায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাগানটি খোলে। কিন্তু ঠিকভাবে কাজ না করা, হিসেবে গরমিলের মত নানা অভিযোগ নিয়ে এক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। এ দিন কর্তৃপক্ষ রমেশ বিশ্বকর্মা নামের ওই নেতাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন।
বাগান সূত্রের খবর, রমেশ বিশ্বকর্মা এক সময় সিটুর সদস্য হলেও এখন তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। বরখাস্তের খবর পেতেই তাঁর পরিবার এবং পরিচিতরা বাগানের দফতরে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। আরও কিছু শ্রমিক সেখানে জড়ো হন। যদিও রমেশ বিশ্বকর্মা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সিটুর চা শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘শাসক দলের লোকেরাই যদি এমন করে তাহলে বাগানের এই হালই হবে। আমরা চাই, বাগান স্বাভাবিকভাবে চলুক।’’
রাতেই বাগানে যান জেলার তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নির্জল দে। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলের কেউ নন।’’