মাধ্যমিকের অভি়জ্ঞতা থেকে সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। তাও উত্তরবঙ্গে টুকলির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রইল উচ্চমাধ্যমিকেও। এমনকি টুকলিতে বাধা পেয়ে স্কুলে ভাঙচুর ও প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
সোমবার দুপুর সওয়া একটা নাগাদ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর একদল পরীক্ষার্থী উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের বানবোল হাইস্কুলের ক্লাসরুমে বেশ কয়েকটি ক্লাসরুমে ভাঙচুর চালায়। চেয়ার, বে়ঞ্চ, পাখা ভেঙে দেয় তারা। হুমকি দেয় প্রধান শিক্ষককে। খবর পেয়ে পুলিশ স্কুলে যাওয়ার আগেই পরীক্ষার্থীরা স্কুল ছেড়ে চলে যায়।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক তথা সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিটিএর জেলা সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, ‘‘পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই টুকলি রুখতে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। আর কিছু বলব না।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নারায়ণ সরকারের দাবি, স্কুলে ভাঙচুরের ব্যাপারে বানবোল হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে কোনও রিপোর্ট দেননি। জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন,‘‘ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আটকাতে পদক্ষেপ করা হবে।’’
শিক্ষকদের দাবি, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই টুকলি রুখতে তাঁরা কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন। পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে শতাধিক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টুকলির কাগজ ও পাঠ্যপুস্তক আটক করা হয়। ফলে ক্ষোভ বাড়ছিল পরীক্ষার্থীদের একাংশের।
এ দিন সকাল ১০টা থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও বায়োলজি পরীক্ষা শুরু হয়। তার আগে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কর্তব্যরত দুই শিক্ষক প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে একটি ক্লাসরুমে ঢুকে দেখতে পান ব্ল্যাকবোর্ডের উপর হুমকি চিঠি লাগানো রয়েছে। তাতে প্রধানশিক্ষক সহ স্কুলের সমস্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। পরীক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে সেই আশঙ্কায় পরীক্ষা শুরুর আগে কোনও শিক্ষকই এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুপুর সওয়া একটা নাগাদ প্রধানশিক্ষক বিপুলবাবু ওই ক্লাসঘরে গিয়ে ওই চিঠি লাগানোর অভিযোগে পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানাবেন বলে জানান। অভিযোগ এর পরেই স্কুলে ভাঙচুর শুরু করে ওই পরীক্ষার্খীদের একাংশ। স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি জবা সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মাদারিহাট উচ্চ বিদ্যালয়েও এ দিন ভাঙচুর করেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অরূপ মিত্র জানান, “পরীক্ষার পর দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বেড়িয়ে যেতেই ভাঙচুর শুরু হয়। তদন্ত করে দেখা গিয়েছে যে দু’টি ক্লাসঘরে ভাঙচুর হয়েছে সেখানে শিশুবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও খিদিরপুর রহমানিয়া হাই মাদ্রাসার পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ওই দু’টি স্কুলের শিক্ষকরা।