জলপাইগুড়িতে মঙ্গলবারও দর্শনার্থীদের ঢল

কালীপুজোও কেন চার দিন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০১
Share:

ভিড়ের কমতি নেই চারদিন পরেও। ছবি: সন্দীপ পাল

জলপাইগুড়িতে কালীপুজো এবং দেওয়ালি উপলক্ষে উৎসব প্রলম্বিত। দুর্গাপুজোয় চার দিন ধরে পুজো এবং উৎসব চলে।

Advertisement

কালী পুজো এক দিনের হলেও উৎসব চার দিন ধরে হচ্ছে। পুলিশের থেকে বিসর্জনের দিন মঙ্গলবার নির্দ্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও সমস্ত বড় বড় পুজো কমিটির প্রতিমা রেখে দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবস্থা বুঝে রাস্তার যানবাহন চলাচল গত তিন দিনের মতো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পুজো কমিটির সদস্যদের বক্তব্য দুর্গাপুজোয় বৃষ্টির জন্য লোকজন ঠিক মতো আনন্দ করতে পারেননি। সারা বছর সবার গতানুগতিক ভাবে কাটে। তার থেকে মুক্তি পেতে যদি উৎসবের দিন বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাতে ক্ষতি নেই। লাভ আছে।

Advertisement

কী বলছেন পুজো উদ্যোক্তারা

বৃষ্টিতে পণ্ড হয়েছিল দুর্গাপুজো, তাই কালীপুজোয় বাড়তি ক’দিন আনন্দ করছেন মানুষ।

বহু মানুষ দূর থেকে আসেন ঠাকুর দেখতে, তাঁদের জন্য সময় দিতে মণ্ডপে রাখা হচ্ছে প্রতিমা

সারা বছর কাটে কাজের চাপে, তাই আনন্দের সময় বাড়লে খুশিই হন শহরের বাসিন্দারা।

জলপাইগুড়িতে দুর্গাপুজোর মত কালিপুজো এবং দেওয়ালি চারদিন ধরে চলছে। গত শনিবার এবং রবিবার দুদিন দেওয়ালি চলেছে। কালীপুজো শনিবার রাতে হয়েছে। তারপর সাধারনত সোমবার অথবা মঙ্গলবার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার কথা। পুলিশের পক্ষ থেকেও মঙ্গলবার বিসর্জনের দিন ধার্য করা হয়েছিল। বড় পুজো কমিটিগুলি নাছোড়। তারা প্রতিমা রেখে দিচ্ছে। শহরের বাড়িগুলো এদিনও দীপাবলির আলোকমালায় সজ্জিত ছিল।

মণ্ডপ এবং প্রতিমা দেখার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গত তিন দিনের মতো রাস্তায় লোকজন বেড়িয়ে পরেছেন। যারা রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মণ্ডপে ঘুরতে চান, তাঁরা ইতিমধ্যে গাড়ি এবং রিকশা ঠিক করতে বেরিয়ে পড়েছেন। মোটামুটি ভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা এবং রাতে জলপাইগুড়ি শহর জমজমাট।

পরিস্থিতি দেখে পুলিশও রাস্তায় নেমে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পুজো কমিটিগুলোর সামনে অন্য দিনের মতো যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ির ট্র্যাফিকের ওসি সৈকত ভদ্র বলেন, “রাস্তায় ভিড় আছে। যানবাহন বেশি রাত পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত থাকবে।”

দুর্গাপুজোর মতো কালীপুজো এবং দীপাবলীর উৎসব চার দিন ধরে হওয়ার কারণ ব্যাখা করে জলপাইগুড়ির প্রধান তিনটি পুজো কমিটির সদস্যরা তিন রকমের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। উৎসবের মরসুম দুর্গাপুজো থেকে শুরু হয়ে কালীপুজোয় শেষ। এ বার দুর্গাপুজোয় বৃষ্টি থাকার জন্যে তেমন করে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি বাসিন্দারা।

জলপাইগুড়ির মুনলাইট ক্লাবের সম্পাদক দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, “দুর্গাপুজো এবার বৃষ্টির জন্য তেমন জমেনি। লোকজন আধিকাংশ সময় গৃহবন্দি ছিলেন। কালীপুজোয় আবহাওয়া ভাল থাকায় আমরা চাইছিলাম বাসিন্দারা উৎসব ভালভাবে উপভোগ করুন। আমরা একদিন বাড়িয়ে বুধবার বিসর্জনের দিন ধার্য করেছি।”

জলপাইগুড়ির দাদাভাই ক্লাবের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন অনেক দূর দুরান্ত থেকে অনেকে জলপাইগুড়ির কালীপুজোর মন্ডপ দেখতে আসেন। অনেকের প্রতিমা দেখার ইচ্ছা থাকলেও স্থানীয় পুজো সামলে আর শহরের পুজো দেখতে আসতে পারেন না। দু’দিনের জায়গায় চারদিন মন্ডপ থাকলে তারা আসতে পারেন। তিনি বলেন, “সন্ধ্যের সময় রাস্তায় ভিড়ই বলে দিচ্ছে যে উৎসবদের দিন যত বাড়বে তত বেশি সংখ্যায় লোকজন দেখতে আসেন। অনেকে প্রথমদিকে ভিড়ের জন্য আসতে পারেন না। তাঁরা এদিন আসছেন।”

এরাও বুধবার প্রতিমা বিসর্জন দেবেন। যুবমঞ্চেৱ চারদিন ধরে মণ্ডপ সজ্জা দেখার পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থা করেছে।

যুবমঞ্চের সম্পাদক শুভেন্দু বসু বলেন, “এখন সমাজের সমস্ত জায়গায় মানুষ একটা স্নায়ু এবং মানসিক চাপে ভোগেন। ভারত পাকিস্তান সীমান্ত থেকে আরম্ভ করে একটা গ্রাম পর্যন্ত সবজায়গায় সব সময় একটা টেনশন কাজ করছে। তার থেকে মুক্তি পেতে উৎসবই একমাত্র মানুষকে চাপমুক্ত মুক্ত করে রাখতে পারে। উৎসবের দিন দুদিনের জায়গায় চারদিন হলে ক্ষতি নেই। মানুষ কটাদিন চাপমুক্ত থাকবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন