ঘোষণার পরে পার ন’বছর, শুরু জলপ্রকল্প

ঘোষণার নয় বছর পর মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভায় শুরু হয়েছে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল প্রকল্পের কাজ। এই জল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পানীয় জলের সুপরিষেবা পাবেন শহরবাসী। তবে জল প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫৮
Share:

সবে বসছে পাইপ। — নিজস্ব চিত্র।

ঘোষণার নয় বছর পর মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভায় শুরু হয়েছে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল প্রকল্পের কাজ। এই জল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পানীয় জলের সুপরিষেবা পাবেন শহরবাসী। তবে জল প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, খুব শীঘ্রই আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল প্রকল্পের পরিষেবা পাবেন শহরের মানুষ। ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা পুরসভার কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল প্রকল্পের টাকা পুরসভায় পড়েছিল। অবশেষে কাজ শুরু করলেও তা খুবই ধীর গতিতে চলছে। এমনকী কবে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে, তা-ও ঠিক মতো বলতে পারছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। আর তাঁদের গাফিলতির ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’’ ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘জমি সংক্রান্তের জন্য এই প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শুরু করা যায়নি। তবে এখন দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। আশা করছি বছর দুয়েকের মধ্যে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের সুপরিষেবা পাবেন শহরের মানুষ।’’

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, ২০০৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার জহরলাল নেহেরু নাশন্যাল আরবান মিশন প্রকল্পে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভায় আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল প্রকল্প তৈরির উদ্যোগ হয়। এর জন্য ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রথম ধাপে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে নদী থেকে জল তুলে সেই জল পরিস্রুত করে পুরবাসীর বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছনোর উদ্যোগ হয়। টাকা পাওয়ার পর পুরাতন মালদহ পুরসভা কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করে দিয়েছিল। তবে ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ সেই সময় জমি চিহ্নিত করতেই পারেনি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে নিমাই সড়ার দিকে জমি চিহ্নিত করেছিল। তবে সেখানে সারা বছর মহানন্দা নদীতে জল না থাকায় ওই জায়গাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ইংরেজবাজার থানার কোতুয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতে দৈবকিপুর গ্রামে এই জল প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়।

এই প্রকল্পের জন্য ৯৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে ছয় বিঘা জমি কেনা হয়। এখন সেই প্রকল্পের কাজ চলছে। মহানন্দা নদী থেকে জল তোলার জন্য একটি বড়ো পাতকুয়ো করা হয়েছে। সেই পাতকুয়োটি সাড়ে ১২টি মিটার গভীর। পাতকুয়োর পাশে তিনটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প করা হবে। আর সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল তুলে নিয়ে গিয়ে পরিশোধিত করা হবে। তারপর পাইপ লাইনের মাধ্যমে শহর জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। আর শহরের সাত জায়গায় জলের সাতটি ওভারহেড ট্যাঙ্ক করা হবে। সেই ট্যাঙ্কগুলির কাজ চলছে বালুরচর, ঝলঝলিয়া, ঘোড়াপীর, মাধব নগর এলাকায়। আর শহরের ২৯টি ওয়ার্ডেই চলছে পাইপলাইন পোঁতার কাজ। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে শহরবাসী বাড়ি বাড়ি আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের পরিষেবা পাবে। মালদহ আর্সেনিক প্রবণ এলাকা। ইংরেজবাজারে একাংশেও জলে আর্সেনিকের প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে। ফলে শহরবাসী এই প্রকল্পের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায়। এছাড়া শুখা মরসুমে ইংরেজবাজার শহরের একাংশ এলাকায় নিয়ম করে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। পুরসভার ১, ২১, ২০, ২৩, ২৪, ২৭, ২৮ এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জলের চরম সমস্যা রয়েছে। সেই সব এলাকায় মানুষ জলের টিউবওয়েলের জলের উপরে নির্ভরশীল রয়েছেন। তাই এই জল প্রকল্পের কাজ হতে দেখে আশায় বুক বেঁধেছেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন