কোথাও স্কুলে ঢুকতেই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। কোথাও চারদিক টহল দিচ্ছে পুলিশ ভ্যান। ঘরের কোথাও ফাঁক-ফোকর রয়েছে কি না, জানালা দিয়ে কেউ ক্যামেরায় কিছু ক্যাপচার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে চলছে শেষ নজরদারি। পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই স্কুলের সামনে মোতায়েন হবে পুলিশ। সেই সঙ্গে একটি ফ্লাইয়িং ভ্যান ঘুরে বেড়াবে চারদিকে। কোচবিহার শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলে যেন একই চিত্র।
আজ, মঙ্গলবার শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। মাধ্যমিকে একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। উচ্চ মাধ্যমিকে যাতে প্রশ্ন ফাঁস আটকানো যায় তাতে, চেষ্টার কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “পরীক্ষায় যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর, এবারে কোচবিহার জেলা থেকে ২৮ হাজারের কিছু বেশি পরীক্ষার্থী রয়েছে। তাঁদের জন্য ৯৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থা রয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলির মধ্যে ১৪টি উত্তেজনাপ্রবণ। এর মধ্যে কোচবিহার শহরের স্কুল যেমন রয়েছে, তেমনই দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ এবং তুফানগঞ্জের গ্রামেও একাধিক স্কুল রয়েছে। ওই স্কুলগুলি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্র থেকে তিনগুণ পুলিশকর্মী থাকবে ওইসব স্কুলগুলিতে। স্কুলের চারদিকে কার্যত পুলিশ টহল দেবে। বিশেষ করে স্কুলের পিছন দিকের পাঁচিল টপকে বা কোনও ভাবে যাতে কেউ পরীক্ষা হলের সামনে যেতে না পারে সেদিক লক্ষ্য রাখার জন্য কড়া নির্দেশ রয়েছে। এ ছাড়াও এক-একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে তিনজন করে ইনভিজ়িলেটর থাকবেন। কোনও পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল আছে কি না তা দেখে নেওয়ার দায়িত্ব থাকবে একজনের।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোচবিহার জেলা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মিঠুন বৈশ্য বলেন, “পরীক্ষা যাতে নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ ভাবে হয় এবং পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধের মধ্যে পড়তে না হয় সে জন্য সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষক বলেন, “পরীক্ষার্থীদের দফায় দফায় চেক করার পরে, সতর্ক করা হবে যাতে কেউ সঙ্গে মোবাইল না রাখে। মোবাইল থাকলে যে পরীক্ষা বাতিল এবং কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে সে কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়।”
এ দিন কোচবিহার নিউটাউন হাই স্কুলে গিয়ে দেখা যায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত সবাই। দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকিরা জানিয়ে দেন, ছবি তোলা নিষেধ রয়েছে। নৃপেন্দ্রনারায়ণ হাই স্কুলে অবশ্য দুপুরের মধ্যেই সিট নম্বর সাঁটার কাজ শেষ হয়েছে। উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অবশ্য স্বাভাবিকভাবেই কাজকর্ম চলছিল। একই ছবি দেখা যায় দিনহাটার ও তুফানগঞ্জের একাধিক স্কুলে। দিনহাটার গোপালনগরের প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলি বলেন, “সাড়ে আটটার মধ্যে শিক্ষকরা স্কুলে ঢুকবেন। পরীক্ষার্থীদের এক ঘণ্টা আগে হলে ঢুকতে হবে।”