West Bengal Municipal Election 2020

পিকে-কে ‘নালিশ’ নেতাদের নামে

পুরভোটে তা ‘বুমেরাং’ হবে না তো? এমন প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। তবে জেলা নেতৃত্ব ‘দ্বন্দ্ব’ মানতে নারাজ।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০২:১৬
Share:

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।

শহর থেকে গ্রাম। কাউন্সিলর থেকে নেতা। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) সংস্থার প্রতিনিধিরা ইংরেজবাজারে বা গ্রামে তৃণমূলের যে কাউন্সিলর বা নেতাদের সঙ্গেই দেখা করছেন, তাঁরাই ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। দলের অন্দরমহলের খবর এমনই। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কারও ক্ষোভ ইংরেজবাজার শহরের বর্তমান বা প্রাক্তন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। আবার কোনও ব্লক নেতার ক্ষোভ দলের একাধিক জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এই ক্ষোভ আসলে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বেরই বহিঃপ্রকাশ।

Advertisement

পুরভোটে তা ‘বুমেরাং’ হবে না তো? এমন প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। তবে জেলা নেতৃত্ব ‘দ্বন্দ্ব’ মানতে নারাজ।

দলীয় সূত্রে খবর, ওয়ার্ডের প্রভাবশালী মানুষ, যে কোনও পদকজয়ী থেকে শ্রমজীবী, একান্নবর্তী পরিবারের কর্তা থেকে শুরু করে ক্লাবের কর্তা— ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভিন্ন স্তর ও পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের খোঁজে পুরভোটের আগে প্রশ্নমালা নিয়ে ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের কাছে ঘুরছেন পিকের দলের সদস্যেরা। উত্তর সরাসরি বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সে সব জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ আলোচনাও করেছে ‘টিম পিকে’।

Advertisement

দলের নেতাদের একাংশ জানিয়েছেন, সেই আলাপচারিতার সময়ই ‘টিম পিকে’র প্রতিনিধিরা পুরপ্রধান বা দলীয় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ তুললেই একাধিক কাউন্সিলর ক্ষোভপ্রকাশ করছেন। তৃণমূলের এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘টিম পিকে-র এক জন আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, বর্তমান পুরপ্রধানের আমলে আমার ওয়ার্ডে কী কী পরিষেবা মিলেছে। আমি তাঁকে জানিয়েছি, এই বোর্ডের প্রথম পুরপ্রধানের আমলে আমার ওয়ার্ড উন্নয়নের ক্ষেত্রে বঞ্চিত থেকে গিয়েছে। বর্তমান পুরপ্রধানের আমলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’’

তৃণমূলের এক মহিলা কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আমাদের দলের পুরবোর্ড যেখানে রয়েছে, সেখানে আমি যে দলের এক জন কাউন্সিলর তা বিশ্বাস করাই মুশকিল। কারণ আমার ওয়ার্ডও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হয়েছে।’’ আর এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘টিম পিকে-র লোকেরা আমার কাছে ওয়ার্ডে কেন জঞ্জাল জমে থাকছে তা জানতে চেয়েছিলেন। তাঁদের বলেছি পুরসভায় গিয়ে খোঁজ নিতে যে আমি এই সমস্যা মেটাতে পুরপ্রধানকে কত বার চিঠি দিয়েছি।’’

দলীয় সূত্রে খবর, গ্রামগঞ্জে গিয়েও ‘টিম পিকে’ একাধিক ব্লক নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দলের একাধিক জেলা নেতার বিরুদ্ধেও ক্ষোভের আঁচ টের পেয়েছে। কালিয়াচক-৩ ব্লকের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘টিম পিকে-র এক সদস্য আমার কাছে ব্লকের দলীয় পরিস্থিতি জানতে চান। আমি তাঁকে বলেছি, এক জেলা নেতাই ওই ব্লকে দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখেছেন। তাঁর অঙ্গুলিহেলনে দলের দখলে থাকা পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধীদের যতটা না গুরুত্ব দেওয়া হয় তার চেয়ে কম গুরুত্ব দেওয়া হয় কয়েক জন দলীয় সদস্যকে।’’

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, কাউন্সিলর থেকে শুরু করে ব্লকের নেতারা যে ভাবে ক্ষোভের কথা টিম পিকে-র কাছে জানিয়েছেন, তাতে ‘দ্বন্দ্বের’ কথাই সামনে এসেছে। জেলা সভাপতি মৌসুম নুর অবশ্য বলেন, ‘‘দ্বন্দ্ব নেই। টিম পিকে-র কাছে কে কী অভিযোগ করেছেন তা জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন