মিষ্টিমুখ: অমনের মুখে রসগোল্লা তুলে দিচ্ছেন তাঁর বাবা-মা। শিলিগুড়ির বাড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বাড়িতে একের পর এক পরিচিত এসেই চলেছেন। পাশাপাশি উপহার আর শুভেচ্ছা নিয়ে আসছেন আত্মীয়-পরিজনেরা। তাঁদের আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছেন না অঞ্জুদেবী ও নরেশবাবু। তাঁদের বাড়ির আদরের অমন এ বার আইএসসি-তে তৃতীয় হয়েছে এই খবর চাউর হতেই বাড়িতে উৎসবের মেজাজ।
শিলিগুড়ির সেবক রোডের বাসিন্দা অমন চৌধুরী এ বারের আইসিএস-এ রাজ্যে তৃতীয় হয়েছে। শুধু তাই নয় সর্বভারতীর স্তরেও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন শিলিগুড়ি ডন বসকো স্কুলের ছাত্র অমন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৯ শতাংশ।
অমনের বাবা নরেশ চৌধুরী পেশায় সিমেন্ট ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের ভাল ফলের আশা ছিল। কিন্তু এত ভাল হবে বুঝিনি।’’ স্কুলে বরাবর প্রথম স্থান অর্জন করত। জীবনে কোনও দিন দ্বিতীয় হয়নি।’’ সেবক রোডে যে আবাসনে অনমের পরিবার থাকে তার বাইরে এখন ভিড় লেগেই রয়েছে। পরিচিতদের চা, মিষ্টি পরিবেশন করতে করতে অমনের মা অঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘ও এত ভাল ফল করার পরে আমরা ভীষণ খুশি। পুজো দীপাবলিতেও এত আনন্দ হয়নি, যতটা এখন হচ্ছে।’’
এ বারের অমন পরীক্ষায় কম্পিউটারে ১০০, অঙ্কে ১০০, অর্থনীতিতে ৯৯, ইংরেজিতে ৯৭, হিসাবশাস্ত্রে ৯৬ পেয়েছে। স্কুলের বাইরেও দু’জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তেন অমন। তিনি জানান, ‘‘সকালেই কয়েক ঘণ্টা পড়তাম। রাতে বেশি পড়তাম না। বাবা মা পড়াশুনার জন্য কোনওদিন আমাকে চাপ দেয়নি।’’ পড়াশোনার বাইরেও ব্যাডমিন্টন খেলেন অমন। স্কুলের হয়ে বাইরেও খেলতে গিয়েছেন তিনি। বলিউড সিনেমাও পচ্ছন্দ অমনের। পরীক্ষার মধ্যেও দিব্যি হিন্দি সিনেমা দেখেছেন বলে জানান। তবে তাঁর কথায়, ‘‘যতটুকুই পড়তাম মন দিয়ে পড়তাম। তখন অন্য কিছু না। পড়াশোনায় কখনও ফাঁকিবাজি করিনি।’’
অমনের স্কুল আজকে বন্ধ থাকায় স্কুলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, তাঁর সহপাঠিদের বক্তব্য ‘‘ও আমাদের স্কুলের গর্ব। অত্যন্ত মার্জিত কথাবার্তায় সবাইকে নিমেষেই আপন করে নেওয়ার মতো আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল ওঁর মধ্যে।’’
নরেশবাবুর তিন ছেলেমেয়েরই আজকে ফল প্রকাশ হয়েছে। অমনের বোন কৃতিকা ও ভাই আদিত্য আইসিএসসি বোর্ডে যথাক্রমে ৯৩ ও ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। দাদার রেজাল্টে খুশি তারাও।