গায়ক: সিপি নীরজকুমার সিংহ। ছবি: স্বরূপ সরকার।
সিন্থেসাইজারটা মঞ্চের কোণে রাখা ছিল। কিছু পরে সেটি যে খোদ পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহের সামনে সাজিয়ে দেওয়া হবে, তা দর্শকরা তো বটেই পুলিশ অফিসারদের অনেকেও অন্দাজ করতে পারেননি। কিন্তু তখনও চমকের আরও বাকি। সিন্থেসাইজার বাজানোর সঙ্গে গানও ধরলেন তিনি। সেই গান লিখেওছেন কমিশনার নিজেই। বাংলায় লেখা ভক্তিগীতি নীচু স্বরে গাইতে গাইতে মিশিয়ে দিলেন ‘দমাদম মস্ত কলান্দার’-এর সুর।
তুমুল হাততালিতে তখন শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডের ভবন গমগম করছে। দুর্গাপুজো এবং মহরম কমিটিগুলির কারা পুরস্কার পেল, কারা পেল না, তা ছাপিয়ে চর্চা চলল সিপি-র (কমিশনার) গান নিয়েই। আইপিএস নীরজকুমার সিংহ ‘কঠোর’ অফিসার বলেই পুলিশ মহলে পরিচিত। শখ নয় পাটনা আকাশবাণীর নথিবদ্ধ শিল্পী হিসেবেও নীরজকুমারের নাম রয়েছে। যদিও সচরাচর সে কথা তিনি প্রকাশ্যে বলেন না।
বুধবারের অনুষ্ঠান আগাগোড়াই ছিল পুলিশের ব্যবস্থাপনায়। বিজয়া এবং মহরমের মতো পার্বণের পরে বাসিন্দাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের অনুষ্ঠান বলে প্রথাগত গাম্ভীর্যও ছিল না। সে কারণেই কমিশনারেটের কয়েকজন অফিসার নীরজকুমারকে অনুষ্ঠানে গাইতে অনুরোধ করেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রিজার্ভ ইন্সপেক্টর শান্তনু তরফদার মঞ্চে বলেন, ‘‘অনেক অনুরোধের পরে শেষে গতকাল রাতে স্যার সম্মতি দিয়েছেন।’’
মঞ্চে ছিলেন কারবালা মসজিদের ইমাম কাজি সাহেব। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকর্তা যে মুন্সিয়ানার সঙ্গে সুফি গেয়েছেন, তা সত্যি প্রশংসাজনক। আজকের অনুষ্ঠানে না এলে উর্দির আড়ালে থাকা এই শিল্পীকে চেনার সুযোগ পেতাম না।’’ একটি পুজো কমিটির তরফে আসা আইনজীবী অখিল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কমিশনার সাহেবের গলা এত সাবলীল এবং সুরেলা!’’ দর্শকরা দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়েছেন। কমিশনার শুধু বললেন, ‘‘মাঝেমধ্যে একটু আধটু রেওয়াজ করি। তাও প্রতিদিন হয়ে ওঠে না।’’