কারও ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার পরে রোগীর পরিবারের কাছে অঙ্গদানের প্রস্তাব দেবে কে? প্রয়োজনে ওই পরিবারকে বোঝানো দায়িত্ব কার। কিংবা ওই পরিবার অঙ্গদানের প্রস্তাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে তাঁদের শান্ত করবেই বা কে? এমনউ নানা প্রশ্নে আটকে গিয়েছে শিলিগুড়িতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অঙ্গদানের প্রক্রিয়া। তাই নানা হাসপাতালে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, সরকারি ও বেসরকারি বিশেষজ্ঞ, পুলিশ-প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গড়ে তাঁদের উপরেই অঙ্গদানের প্রস্তাব দেওয়ার ভার দেওয়া হোক।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অঙ্গদানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মত নিয়েই পদক্ষেপ করতে হবে।’’ সম্প্রতি শিলিগুড়ির এনজেপি এলাকার দশম শ্রেণির ছাত্রীর কলকাতায় ‘ব্রেন ডেথ’ হওয়ার পরে তার অঙ্গদান করেন পরিবারের লোকজন। তারপরেই শহরবাসীদের মধ্যেও অঙ্গদান নিয়ে নানা ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা ‘ব্রেন ডেথ’-এ পরে অঙ্গদান করার ব্যাপারে সচেতন করতে ক্লিনিক চালু করেছে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ির সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালেও অঙ্গদানের প্রক্রিয়া, পরিকাঠামো নিয়ে রোজই নানা স্তরে আলোচনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
যেমন, শিলিগুড়ির বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক শৈলজা গুপ্ত বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় জখম কয়েকজনের ‘ব্রেন ডেথ’-এর ঘটনা আমি জানি। ভেন্টিলেটরে দিন দশেক রেখে অপেক্ষার পরে বাড়ির লোকেরা নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বাড়ি পৌঁছনোর আগে মৃত্যু হয়েছে সকলেরই।’’ শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধার চিকিৎসক সুশান্ত রায় জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানে বছরে গড়ে ৫ জনের ‘ব্রেন ডেথ’-এর ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘‘কারও ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার পরে আমরাই যদি বাড়ির লোকজনকে বলি যে অঙ্গদান করে অন্যদের বাঁচান, তাতে ভাল ও মন্দ, দুই প্রতিক্রিয়া হতে পারে। চাপ দেওয়ার অভিযোগও উঠতে পারে। তাই আমরা বিধিবদ্ধ কমিটি চাইছি।’’
চিকিৎসকেরা চাইছেন, সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে কারও ‘ব্রেন ডেথ’ হয়েছে ঘোষণা হলে ওই কমিটিকে জানানো হবে। কমিটির তরফে রোগীর পরিবারের সঙ্গে সেই কথা বলা হবে। যে হেতু পুলিশ-প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী, বিশেষজ্ঞরা কমিটিতে থাকবেন ফলে বিতর্কের অবকাশ কম থাকবে বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা।
দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানতে হবে।’’