বাপ্পা সাহা
প্রায়-হারা ম্যাচেও ক্লাবকে বহুবার উদ্ধার করে এনেছিল সে।জয় ছিনিয়ে এনেছিল বিপক্ষের গ্রাস থেকে। কিন্তু জীবনের যুদ্ধে হঠাৎই থেমে যেতে হল ক্রিকেটার বাপ্পা সাহাকে। কফিনবন্দি হয়ে তাঁর দেহ পৌঁছল সেই চেনা ক্লাবের মাঠে। সতীর্থদের কারও চোখে তখন জল। কেউ-বা কোনও মতে কফিনে ফুলের গোছা রেখেই দ্রুত সরে গিয়ে বলছেন, “বাপ্পার মরদেহে ফুল রাখছি, এটা ভুলে যেতে চাই!”
শুক্রবার সন্ধ্যা। তীব্র গরমে জলপাইগুড়ির রাস্তা খানিক ব্যস্ততাহীনই ছিল সারাদিন। বাপ্পার দেহ পৌঁছতেই ধীরে ধীরে ভিড় জমে গেল জেলা ক্রীড়া সংস্থার দফতরের সামনে। জলপাইগুড়ি জেলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন বাপ্পা। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় করলা নদীর পাশে জেওয়াইএমএ ক্লাবে। ক্লাবের মাঠে খেলা চলছিল। দেহ পৌঁছতেই খেলা বন্ধ রেখে বাপ্পাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর পুলিশ লাইন লাগোয়া এফইউসি ক্লাব ঘুরে নিউটাউন পাড়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বাপ্পা সাহার মরদেহ। ততক্ষণে সেখানেও ভিড় জমেছে।
ময়নাতদন্তে বাপ্পার শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ মদ মিলেছে এবং জলে ডুবেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। দেহ পৌঁছনোর পর বাপ্পার কাকা হরিবালা রায় বলেন, “বাপ্পার কোনও নেশা ছিল না। কখনও কারও সঙ্গে অভব্য আচরণও করেনি। শেষে কাদের সঙ্গে যে মিশল! যার জেরে আজ এই পরিণতি!’’
বাপ্পার মৃত্যুরহস্যের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা জানিয়েছেন। বাপ্পার বন্ধু অর্ণব গুহ বলেন, “এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না যে, বাপ্পা নেই! ওর এই পরিণতির জন্য যদি কেউ বা কারা দায়ী হয়, তবে তাদের যেন চরম শাস্তি হয়!”