বিনয় কীসে আলাদা

শুনানির সময়ে এই প্রশ্ন তোলে হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪০
Share:

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলল। নিজস্ব ছবি

অভিযুক্তের তালিকায় বিমল গুরুং, রোশন গিরির সঙ্গে বিনয় তামাংয়ের নামও রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন বিনয়ের প্রতি পুলিশ আলাদা অবস্থান নিচ্ছে? এ দিন বিমল-রোশনদের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানির সময়ে এই প্রশ্ন তোলে হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ।

তার আগেই গুরুংদের আনইজীবীরা প্রসঙ্গটি তুলেছেন। সেই সূত্র ধরেই ডিভিশন বেঞ্চের এই প্রশ্ন। সরকারি আইনজীবী এর জবাবে যা বলেন, তাতেও সন্তুষ্ট হয়নি হাইকোর্ট। বরং পরবর্তী শুনানির সময়ের এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। আগামী সোমবার ফের শুনানি। সে দিন সরকারপক্ষের হয়ে সওয়াল করবেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।

বিমল গুরুংদের আইনজীবীরা এ দিন আদালতকে জানান, একাধিক মামলায় একই অভিযোগে বিমল-রোশনের সঙ্গে বিনয় তামাংও অভিযুক্ত। কিন্তু সেই মামলাগুলিতে বিমল-রোশনদের গ্রেফতার করতে চাইলেও পুলিশ বিনয়কে ছাড় দিয়ে রেখেছে। যে মামলাগুলিতে বিমল-রোশনের আগাম জামিনের বিরোধিতা করছে পুলিশ, সেইগুলিতে অভিযুক্ত হয়েও কোনও জামিন না নিয়ে বিনয় দিব্যি দার্জিলিঙে রয়েছেন, দাবি করেন গুরুংদের আইনজীবীরা। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী সরকারপক্ষের কাছে জানতে চান, কেন বিনয় তামাংয়ের প্রতি পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা?

এর জবাবে সরকারপক্ষের তরফে একাধিক যুক্তি দেওয়া হয়। সরকারি আইনজীবী অদিতিশঙ্কর চক্রবর্তী জানান, বিনয় অনেক মামলায় পুলিশকে বয়ান দিয়েছেন। যা শুনে বিচারপতি বাগচী বলেন, “পুলিশকে সহযোগিতা করা মানেই অপরাধীর অপরাধ লঘু হয়ে যায় না।” তার ব্যাখ্যা করে বিচারপতি বলেন, ‘‘ধরুন দুই ভাই মিলে কাউকে খুন করল। এক ভাই পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করল। কী ভাবে খুন করেছে, তা বলল। তার অর্থ এই নয় যে, ওই ভাইয়ের অপরাধ লঘু হয়ে যাবে।’’

সওয়াল-জবাবের মাঝেই ডিভিশন বেঞ্চ আবার মন্তব্য করে, ‘‘জননেতাদের এমন ভাবে কথা বলা বা আচরণ করা উচিত যাতে, কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা না ছড়ায়।’’ বিচারপতি বাগচী একসময়ে বলেন, “কোনও নেতা ভাল কি না, সে বিচার আমরা করছি না। আমরা বিচার করব, কেউ অপরাধমূলক কাজ করেছে কি না।” একই সঙ্গে পরবর্তী শুনানিতে সরকার পক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চায় ডিভিশন বেঞ্চ। সরকার পক্ষের তরফে বিমল এবং রোশনের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা তালিকা করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। গুরুংদের আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর, আনন্দ ভাণ্ডারী এবং উর্গেন লামার হাতেও তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এ দিন মোর্চার প্রবীণ নেতা-নেত্রীদের আগাম জামিন, জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন