ফাইল চিত্র।
বিনয় তামাঙ্গকে ‘কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান’ করে নতুন অস্থায়ী বোর্ড হয়েছে। তবু বন্ধ উপেক্ষা করে দার্জিলিং পাহাড় পুজোর আগে পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে, এমন আশা দেখছেন না পাহাড়ের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তো বটেই, জিএনএলএফ, গোর্খা লিগ, জন আন্দোলন পার্টির নেতাদের সকলেরই বক্তব্য, ত্রিপাক্ষিক বৈঠক না ডাকা অবধি পাহাড়ের জনজীবন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হওয়া মুশকিল। তবে ধীরে ধীরে জায়গায় জায়গায় স্বাভাবিক ছন্দ দেখা যাচ্ছে। কেয়ারটেকার বোর্ড তাতে গতি আনতে পারে বলেও অনেকেই একান্তে মানছেন। তবু ত্রিপাক্ষিক যে চাই, সেটা বুঝিয়ে জাপের নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘ত্রিপাক্ষিক বৈঠক না ডাকলে পাহাড়বাসী পুরোপুরি সন্তুষ্ট হবেন না। পাহাড়ের সমস্যাও মিটবে না।’’
বাম জমানায় ২০০৭ সালে জিএনএলএফ প্রধানকে কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান পদে রেখেও পাহাড়ের অনেক সমস্যাই মেটেনি। বরং, পাহাড়বাসীদের ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, ঘিসিঙ্গের সমতল থেকে ফেরা মুশকিল হয়ে পড়ে। সমতলে বসেই ২০০৮ সালের ১০ মার্চ কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন তিনি। তাই প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ ভাবে সমস্যার সমাধান হবে না। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতে হবে।’’ অশোকবাবু মনে করেন, যদি একান্তই কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান করতে হতো, তা হলে বিদায়ী চেয়ারম্যানকেই সেখানে দায়িত্ব দেওয়া দরকার।
হরকা বা জিএনএলএফের ক্ষোভের কথা জানার পরে পাহাড়ের ছন্দে ফেরা নিয়ে এখন সংশয়ে অনেকেই। পুজোর আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা আশা করেছিলেন, তাঁদেরও উদ্বেগ বেড়েছে। দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটর প্রদীপ রাই, মিতেন লামারা বলেন, ‘‘পুজোর মধ্যে পাহাড় স্বাভাবিক হবে ভেবেছিলাম। কেয়ারটেকার বোর্ড হওয়ায় বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা পাহাড়বাসীর ভরসা অর্জন করতে না পারলে গোলমালের আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।’’
সমতলের ট্যুর অপারটেররাও একই রকম চিন্তিত। ট্যুর অপারেটর তাপসসাধন রায় বলেন, ‘‘বোর্ড ঠিকঠাক কাজ করলে পুজোর মরসুমে পাহাড়ে যাতায়াতটা শুরু করানো যাবে। দেখা যাক কী হয়!’’
তবে জিটিএ-র প্রশাসকরা দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে স্বাভাবিক করবেন বলে আশা পাহাড়ের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষের। জিটিএ-র প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বিনয় তামাঙ্গের নাম মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার পরপরই কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কালিম্পঙের এক হোটেল মালিকের কথায়, ‘‘জিটিএ-র প্রশাসকরা যদি পানীয় জল, রাস্তা-সহ মানুষের প্রতিদিনের দুর্ভোগের কিছুটা হলেও মেটান, তবে কোনও অডিও বার্তায় বাসিন্দারা সাড়া দেবেন না।’’