সংস্কার নেই, বেহাল পড়ে তিস্তা ক্যানাল

ভেঙে পড়েছে ক্যানালের সিমেন্টের চাদর। দুপাশের মাটিও গার্ড ওয়ালের অভাবে ঝুরঝুরে হয়ে ধসে পড়ছে। গজিয়েছে আগাছাও। তবুও সংস্কারহীন ক্যানাল দিয়েই সেচের জমিতে জল পাঠানোর কাজ করছে সেচ দফতর। জলের স্রোতে ক্যানালের আরও ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলেও হেলদোল নেই সেচ দফতরের। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি ক্যানালে।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৩:০০
Share:

ভেঙে পড়েছে ক্যানালের পাশের দেওয়াল। —নিজস্ব চিত্র।

ভেঙে পড়েছে ক্যানালের সিমেন্টের চাদর। দুপাশের মাটিও গার্ড ওয়ালের অভাবে ঝুরঝুরে হয়ে ধসে পড়ছে। গজিয়েছে আগাছাও। তবুও সংস্কারহীন ক্যানাল দিয়েই সেচের জমিতে জল পাঠানোর কাজ করছে সেচ দফতর। জলের স্রোতে ক্যানালের আরও ক্ষতি হবার আশঙ্কা থাকলেও হেলদোল নেই সেচ দফতরের। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে তিস্তা সেচ প্রকল্পের বাঁ হাতি ক্যানালে।

Advertisement

তিস্তা সেচ প্রকল্পের মোট পাঁচটি ক্যানাল রয়েছে। এর মধ্যে চারটি শাখা ক্যানাল ও একটি মূল বাঁ হাতি ক্যানাল। প্রত্যেকটি ক্যানালেই শীতের সময় সেচের জল ছাড়া হয়। জানুয়ারি থেকে মে এই পাঁচ মাস ক্যানাল দিয়ে সেচের জল ছাড়া হয়। অবশিষ্ট সময়ে ক্যানাল শুকনোই পড়ে থাকে।

অবসরের এই ৭ মাসই সেচের ক্যানাল পরিদর্শন এবং সংস্কারের কাজ করার প্রকৃত সময়। কিন্তু গত বছর বিশেষ সংস্কার কাজ না করেই বাঁ হাতি মূল ক্যানাল এবং ১ ও ১এ এই শাখা ক্যানালগুলি দিয়ে রাজাডাঙা, ক্রান্তি, লাটাগুড়ি এলাকায় সেচের জল পরিবহণের কাজ চালানোয় ক্যানালের সার্বিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ। ক্রান্তি থেকে লাটাগুড়ির ক্রান্তি মোড়ের মাঝখানে উত্তর মাটিয়ালি এলাকায় বাঁ হাতি ক্যানালের অবস্থা সবথেকে খারাপ। ক্যানালের পাশ দিয়ে সেচদফতরের পরিদর্শনের জন্যে রাস্তা থাকলেও একবছরেরও বেশি সময় ধরে গার্ড ওয়াল না থাকায় সেই রাস্তা ধসে পড়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে সিমেন্টের বড় বড় টুকরো খুলে পড়ায় কার্যত বেহাল দশায় পৌঁছে গেছে ক্যানালটি।

Advertisement

ক্রান্তি এলাকার চাষি মেহবুব আলমের কথায়, ‘‘সংস্কার না করে জল ছাড়াতেই সমস্যা বেড়েছে। যদিও এবার বড় ধরনের বিপত্তি ঘটেনি। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে সেচের জল ক্যানাল ভেঙে বেরিয়ে এসে বড় সমস্যাও তৈরি করে দিতে পারে।’’

তিস্তা সেচ প্রকল্পের শুধুমাত্র বাঁ হাতি ক্যানাল দিয়ে ৪৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমিকে সেচের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে কেবলমাত্র ১০হাজার হেক্টর জমিকে বাঁ হাতি ক্যানালের সেচের আওতায় আনা গিয়েছে। বাঁ হাতি মূল ক্যানালটি ছাড়াও মোট ৭টি শাখা ক্যানাল তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে। সম্পূর্ন হয়েছে চারটি শাখা ক্যানাল। মূল বাঁ হাতি ক্যানালের দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটার এবং শাখা চারটি ক্যানালের সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৮০কিলোমিটার।

এই ১১০ কিলোমিটার ক্যানালের ব্যাপক সংস্কার দরকার হলেও নিয়মরক্ষার সংস্কার ছাড়া বিগত বছরে তেমন কোনই কাজ হয়নি বলে স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ। সেই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ তিস্তা সেচ প্রকল্পের সেচকর্তারা। তিস্তা সেচ প্রকল্পের অন্যতম ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী আধিকারিক ললিত নারায়ণ সিংহের কথায়, ‘‘চলতি মাসের পরই বৈঠক করে এবারের মত ক্যানাল দিয়ে সেচের জল পাঠানো বন্ধ করা হবে। তার পরই ক্রান্তি এলাকায় যে সংস্কার প্রয়োজন তা দ্রুতই করে ফেলা হবে। তবে ক্যানালে সিমেন্টের চাদর খসে পড়ার যে খবর রয়েছে, তাতে সেচের জল পাঠানোর কাজে কোন সমস্যা হবে না জেনেই মাঝপথে জল পাঠানো বন্ধ রাখা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন