রোগী মৃত্যুতে বচসা শহরে

পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত রোগিণীর নাম সন্ধ্যা হাজরা (৫৮)। তাঁর বাড়ি বাঘা যতীন কলোনিতে। শনিবার দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে খালপাড়ার ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০২:৩২
Share:

হাসপাতালে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

কিডনির অসুখে আক্রান্ত এক রোগিণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র শিলিগুড়ির খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল। রবিবার সকালের ঘটনা। অভিযোগ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই ডায়ালিসিস ইউনিট চালানো হচ্ছে ওই নার্সিংহোমে। চিকিৎসক ছাড়াই ওই রোগিণীকে ভর্তি করিয়ে ডায়ালিসিস করানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই রোগিণী মারা যান। এ দিন তা নিয়ে রোগিণীর লোকজনের সঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের গোলমাল বাঁধে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

Advertisement

পুলিশ এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত রোগিণীর নাম সন্ধ্যা হাজরা (৫৮)। তাঁর বাড়ি বাঘা যতীন কলোনিতে। শনিবার দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে খালপাড়ার ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বিশাল গোলে না-থাকলেও রোগিণীকে ভর্তি করিয়ে ডায়ালিসিস করানো হয়। রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক রোগিণীকে অন্যত্র নিতে বলেন। তখন ডায়ালিসিসের চিকিৎসক বিশাল গোলেকে ডাকার দাবি তোলেন আত্মীয়েরা। তাঁরা চিকিৎসক বিশাল গোলেকে ফোন করলে ওই চিকিৎসক জানান তিনি বাইরে রয়েছেন। কার নির্দেশে রোগিণীকে ভর্তি করিয়ে ডায়ালিসিস করানো হয়েছে সেই প্রশ্ন তোলেন আত্মীয়েরা। তা নিয়ে বচসা বাঁধলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাতেই পুলিশ যায়। ইতিমধ্যেই আইসিইউ’তে নিয়ে যাওয়া হয় ওই রোগিণীকে। রাতভর সেখানে রাখার পর সকালে পরিবারের লোকদের সন্দেহ হয় তিনি আদৌ বেঁচে রয়েছে কি না। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে সেই সন্দেহর কথা জানালে একটু পরেই নার্সিংহোমের তরফে রোগিণীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানিয়েছে, অভিযোগ পেলে তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। মৃতার ছেলে বিশ্বদীপ জানান, চিকিৎসক বিশাল গোলের কাছে সম্প্রতি তাঁর মা’র চিকিৎসা হচ্ছিল। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন প্রয়োজনে ডায়ালিসিস করতে হতে পারে। ওই দিন অসুস্থ অবস্থায় সন্ধ্যাদেবীকে নার্সিংহোমে আনা হলে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক যে নেই তার কিছুই বলা হয়নি। ডায়ালিসিসও করানো হয়। বিশ্বদীপ বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে স্পষ্ট। পুলিশকে অভিযোগ জানাব।’’ চিকিৎসক গোলে বলেছেন, ‘‘আমি ওই নার্সিংহোমের ডায়ালিসিস ইউনিটে ‘ভিজিটিং’ চিকিৎসক হিসাবে রয়েছি। আমার অধীনে কোনও রোগী ভর্তি হয় না।’’

Advertisement

নার্সিংহোমের ম্যানেজার রাজেশ সোমানি বলেন, ‘‘বিশালবাবুর প্রেসক্রিপশনে ডায়ালিসিসের প্রয়োজনের কথা লেখা ছিল। চিকিৎসক না-থাকলেও সেই মতো নার্সিংহোমের ফিজিশিয়ান প্রশান্ত ভৎস এবং ডায়ালিসিস ইউনিটের সিনিয়র টেকনিশিয়ান কথা বলে রোগিণীর ডায়ালিসিস করেছে।’’ প্রশান্তবাবু বিরুদ্ধে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছে যে চিকিৎসক হিসাবে তাঁর বাইরের দেশের শংসাপত্র রয়েছে। এখানে চিকিৎসার জন্য যা যথাযথ নয়। যদিও প্রশান্তবাবুর দাবি, তিনি ডায়ালিসিস বিষয়ে কিছুই জানেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন