মানিকচক শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে স্কুলের মাতা কমিটিকেও সংবর্ধনা দিতে চাইছে মানিকচক শিক্ষানিকেতন। শিক্ষার মানোন্নয়নে ও স্কুলের নানা কর্মসূচিতে মায়েদের যোগদান বাড়াতে চলতি শিক্ষাবর্ষে এই স্কুল ১৫ জনকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করেছে। জানা গিয়েছে, কমিটিতে সভাপতি হিসেবে প্রধান শিক্ষক থাকলেও বাকি ১৪ জনই মহিলা। সেই ১৪ জনকেই বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, নারী দিবসের পরদিন পড়াশোনায় এগিয়ে থাকা স্কুলের ৫৫ জন পড়ুয়ার মায়েদের সঙ্গে কিছুটা পিছিয়ে থাকা ৫৫ জন পড়ুয়ার মায়েদের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের মতবিনিময় করানো হবে।
মালদহ থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কের ধারেই রয়েছে মানিকচক শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল। কেন এই অভিনব উদ্যোগ? স্কুলের প্রধান শিক্ষক জ্যোতিভূষণ পাঠক বললেন, “এটা ঠিকই যে, আমাদের স্কুলে মাতা কমিটি আগে ছিল না। শুধু অভিভাবকদেরই একটি কমিটি ছিল। ছাত্রছাত্রীদের বাবারাই অভিভাবক হিসেবে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে আমরা লক্ষ্য করেছি, বছরে দু’বার ডাকা অভিভাবক মিটিংয়ে ৮০ শতাংশ মায়েরাই হাজির হন। পড়ুয়াদের কোনও সমস্যা হলে মায়েরাই স্কুলে সমাধানের জন্য আসছেন। সেইকারণে এ বছরই প্রথম এই কমিটি গড়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ‘‘কমিটির ১৪ জন মহিলার মধ্যে আহ্বায়ক মহুয়া যাদব স্কুলের শিক্ষিকা, বাকি ১৩ জনই অভিভাবিক। প্রতি মাসের শেষ শুক্রবার মাতা কমিটির বৈঠক বসে। স্কুলের কোনও ছাত্রছাত্রীর কোনও ধরনের সমস্যা হলে এই কমিটিই আলোচনা করে সেই সমস্যা মেটাচ্ছে। এবং তাতে দ্রুত ফলও মিলছে বলে দাবি প্রধান শিক্ষকের। সেই কারণেই নারী দিবসে কমিটির সদস্যদের উত্তরীয়, ফুল, মিষ্টি ও ট্রফি দিয়ে সংবর্ধিত করা হবে। মাতা কমিটির অন্যতম সদস্য অশোকা চৌধুরী বলেন, “পড়ুয়াদের বিশেষ করে ছাত্রীদের অনেক ধরনেরই সমস্যা হয়ে থাকে। আমরা আলোচনা করে রীতিমতো বাড়ি গিয়ে মায়েদের সঙ্গে কথা বলে সেই সমস্যা মেটাচ্ছি।’’
এদিকে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে লেখাপড়ায় এগিয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীরা যেমন রয়েছে, তেমনি তাঁদের চেয়ে পিছিয়ে পড়া অনেক ছাত্রছাত্রীও রয়েছে। শিক্ষায় এগিয়ে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা রয়েছে, তাদের মায়েরা কীভাবে সেই ছেলেমেয়েদের তৈরি করছে, তা পিছিয়ে পড়া মায়েরা জেনে তাঁরাও যেন নিজেদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন সেজন্য স্কুলই পদক্ষেপ করেছে। দু’তরফের ৫৫ জন মা-কে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের মত বিনিময় করানো হবে। প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘এই পদক্ষেপে স্কুলের পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের মায়েরা উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁদের ছেলেমেদের শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও সচেষ্ট হবেন।’’