উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা
North Bengal University

বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ বাতিল, চলল কর্মবিরতি

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের আশঙ্কা, আগামী দু’দিন আন্দোলনের জেরে, ফিনান্স বিভাগ কাজ করতে না পারলে মাসের শুরুতে শিক্ষক, আধিকারিক, কর্মীদের বেতন দিতে সমস্যা হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৯
Share:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ আচার্য বাতিল করে দেওয়ার প্রতিবাদে কর্মবিরতি করে আন্দোলনে নামল ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স বিভাগের সামনে দিনভর চলল অবস্থান-বিক্ষোভ। ফিনান্স অফিসার, অন্যান্যেরা গেলেও এ দিন কাজ করতে পারেননি। কর্মীদের সঙ্গে অস্থায়ী শিক্ষকেরাও ছিলেন। তাঁদের বেতন বৃদ্ধিও স্থগিত করা হয়েছে একই সঙ্গে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের আশঙ্কা, আগামী দু’দিন আন্দোলনের জেরে, ফিনান্স বিভাগ কাজ করতে না পারলে মাসের শুরুতে শিক্ষক, আধিকারিক, কর্মীদের বেতন দিতে সমস্যা হতে পারে। তবে আজ, বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত দিল্লি থেকে ফিরলে, আন্দোলনকারী কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছিলেন। সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন কর্মীরা।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘ফিরে গিয়ে ওঁদের সঙ্গে কথা বলব। অনুরোধ করছি, আলোচনায় বসতে, বিশ্ববিদ্যালয় যাতে সচল থাকে তা দেখতে।’’ আন্দোলনকারীরা উপাচার্য এবং আচার্যের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের পরে উপাচার্য, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, ফিনান্স অফিসার, কর্ম সমিতির এক সদস্য মিলে আলোচনা করে বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে মান্যতা দেন। ২০ ফেব্রুয়ারি নির্দেশিকা জারি হয়।

Advertisement

সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত রায়ের অভিযোগ, ‘‘এ সবের পরে, উপাচার্য কলকাতায় গিয়ে কী শুরু করেছেন? ধিক্কার জানাই। প্রয়োজনে আচার্যকে আসতে হবে। উপাচার্য আচার্যকে মিথ্যে অভিযোগ করছেন। ওঁর হাত ধরে জোর করে সই করিয়ে নিয়েছি বলছেন। আমরা জোর করে যদি করে থাকি, পরের দিন কেন বিজ্ঞপ্তি দিলেন! তা ফিনান্স দফতরে কেন গেল? মঙ্গলবার হঠাৎ করে তা বাতিল করা হল।’’ সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির মুখপাত্র তন্ময় বাগচীর দাবি, ‘‘রাজ্যপাল যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন তা অনৈতিক।’’

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কর্ম সমিতির বৈঠক থাকলেও রাজ্যের সম্মতি নেই বলে পরে তা বাতিল হয়। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে উপাচার্যকে ঘেরাও করে আন্দোলন চলতে থাকে। রাতে আলোচনায় ডেকে ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির কথা জানানো হয়। অস্থায়ী শিক্ষকদের ন্যূনতম বেতন ৫৭ হাজার ৭০০ টাকা করা হয়। এখন তা বাতিল করার পাশাপাশি, আন্দোলনকারী সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত এবং আনোয়ার আলম-সহ বাকিদের ক্ষেত্রে অবৈধ কাজের অভিযোগে ব্যবস্থা, এমনকি, উপাচার্য চাইলে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ দিন রঞ্জিত বলেন, ‘‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশের চিঠি পাইনি। শুনেছি। আমার এবং আনোয়ারের নাম রয়েছে। আমাদের নিয়ে যে নোংরামি শুরু হয়েছে তার প্রতিবাদ কী ভাবে হবে তা দেখাব। সঙ্গে সমস্ত কর্মচারীরা থাকবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আচার্যের উদ্দেশ্যে বলছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হচ্ছে, এসে দেখুন। যে রিপোর্ট করা হচ্ছে, তা মিথ্যে। আমি, আনোয়ার আলম যদি খারাপ কিছু করে থাকি, বরখাস্ত করুন। ওখানে বসে নয়। এতে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোকে নোংরা করা হচ্ছে।’’

অস্থায়ী শিক্ষক সংগঠনের তরফে দীপাঞ্জন মৈত্র বলেন, ‘‘আমাদেরও বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ একই সঙ্গে হয়েছিল। বাতিল হয়েছে। তাই আমরা আন্দোলনকে সমর্থন করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন