Raipur Tea Garden

চাল-আটার মান-পরিমাণে আপত্তি, বিক্ষোভ বাগানে

খাদ্য দফতরের দাবি, রায়পুর চা বাগানের সাড়ে পাঁচশো পরিবারের মধ্যে পাঁচশো পরিবারের অন্ত্যোদয় প্রকল্পে প্রতি মাসে ২১ কেজি চাল এবং সাড়ে ১৩ কেজি আটা পাওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

‘দুয়ারে রেশন’ এলেও ফিরিয়ে দিলেন বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকেরা। জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগানের শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে সেদ্ধ চালের পরিবর্তে আতপ চাল দেওয়া হচ্ছে রেশনে। আতপ চাল খেলে পেটের সমস্যা হয় বলে চা শ্রমিকদের দাবি। চালের সঙ্গে পরিবার পিছু ১৩ কেজি করে আটা দেওয়ার কথা থাকলেও কোনও মাসে সাত কেজি, কোনওমাসে আট কেজি আটা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুরো ওজনের আটা দেওয়া হলেও, চালে ওজন কমিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবাদে, বন্ধ রায়পুর চা বাগানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বৃহস্পতিবার। তাঁদের দাবি, সকলকে বরাদ্দ পুরো রেশন দিতে হবে। পুরো রেশন না দেওয়া হলে, কেউ রেশনের সামগ্রী নেবেন না বলে অনড় থাকেন বন্ধ বাগানের শ্রমিকেরা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে চাল, আটা, চিনি নিয়ে ফিরে যান রেশন দিতে আসা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। প্রশাসনের তরফে দাবি, বিষয়টি নিয়ে খাদ্য দফতরের কাছে বিশদে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

Advertisement

খাদ্য দফতরের দাবি, রায়পুর চা বাগানের সাড়ে পাঁচশো পরিবারের মধ্যে পাঁচশো পরিবারের অন্ত্যোদয় প্রকল্পে প্রতি মাসে ২১ কেজি চাল এবং সাড়ে ১৩ কেজি আটা পাওয়ার কথা। বাকি৫০টি পরিবার খাদ্য সুরক্ষা প্রল্পের আওতায়। বাগানের শ্রমিকেরা সকলে সমান রেশন চান। তাই সকলকে কুলোতে পরিমাণে কম-বেশি হয়ে যায়। যদিও সরকারি নির্দেশে রায়পুর চা বাগানে সাড়ে পাঁচশো পরিবারই অন্ত্যোদয় প্রকল্পের আওতাধীন বলে নির্দেশিকা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাকি পরিবারের জন্য বরাদ্দ চাল-আটা যাচ্ছে কোথায়, প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমিকেরা।

খাদ্য দফতরের আধিকারিক দাওয়া ওয়াঙ্গেল লামাকে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মহকুমাশাসক (জলপাইগুড়ি সদর) তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “খোঁজ নিচ্ছি। জেলা খাদ্য নিয়ামককে বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছি।”

Advertisement

রায়পুর চা বাগানে রেশন বিলির দায়িত্ব রয়েছে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উপরে। পাতকাটা এলাকার ওই গোষ্ঠীর দলনেত্রী মিনা বেগম বলেন, “আগে এই সমস্যা ছিল না। হঠাৎ অফিস থেকে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে। কেন কমিয়েছে, জানি না! এ দিকে, শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে আমাদের পড়তে হচ্ছে। কখনও আমরা কমিশনের টাকা থেকে চাল-আটা কিনে শ্রমিকদের দিচ্ছি। কারণ, না হলে আমাদের উপরেই চড়াওহন শ্রমিকেরা।”

বাগানের শ্রমিক পঞ্চমী ওরাওঁয়ের দাবি, “আগের মাসে রেশন আনতে গেলে আমাকে বলেছে, আটা নেই। শুধু চাল পেয়েছি।” বুধেল লোহারের ক্ষোভ, “দেওয়ার কথা ১৩ প্যাকেট আটা, দিয়েছে মাত্র আট প্যাকেট। বলেছে বাকিটা পরে দেবে।” এ দিন বিক্ষোভে ছিলেন তৃণমূল নেতা প্রধান হেমব্রম। প্রধানের স্ত্রী পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তৃণমূল নেতা প্রধানহেমব্রম বলেন, “সকলকে আমাদের কথা বলেছি। কেউ শোনেনি। উল্টে, রেশন না নিলে পুলিশে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে ব্লক থেকে। প্রাপ্য রেশনের জন্য জেল খাটতেওরাজি আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন