এই চত্বরেই তৈরি হবে থানা। — নিজস্ব চিত্র
এ বছরে বিমানের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে বছরের যাত্রী সংখ্যা দশ লক্ষের উপরে যাচ্ছে বলে এয়োরপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এএআই) তরফে ঘোষণা করা হয়েছে। সন্ধ্যায় বিমান ওঠানামা থেকে নতুন অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন তৈরির প্রক্রিয়াও হাত দিয়েছে এএআই। মাঝরাতে বিমানও পরীক্ষামূলক ভাবে নামা-ওঠা শুরু করেছে। তাই দ্রুত বাগডোগরা বিমানবন্দর চত্বরের নিরাপত্তা, নজরদারি বাড়াতে চাইছেন এএআই কর্তৃপক্ষ। অবশেষে দীর্ঘ দিন ধরে পুলিশের দেওয়া প্রস্তাব মেনে নতুন থানা- ‘এয়ারপোর্ট থানা’র তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এএআই তরফেই শিলিগুড়ি পুলিশকে পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। গত মাসের শেষেই এএআই-র বাস্তুকারদের তৈরি নকশা অনুমোদন করে দিয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা, ডিসি (সদর) ইন্দ্র চক্রবর্তী নকশা খতিয়ে দেখেছেন। বিমানবন্দরে ঢোকার মূল গেটের ডান পাশেই নতুন এয়ারপোর্ট থানা তৈরি হবে। এখন সেখানে এক কামরার ছোট্ট পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। এর পাশেই আপাতত ৩টি ঘর তৈরি করে কাজ শুরু হবে।
নিয়ম অনুসারে, প্রথমে ফাঁড়িটিকেই বড় পরিকাঠামোতে উন্নীত করে সেটিকেই দ্রুত এয়ারপোর্ট থানা হিসাবে ঘোষণা করা হবে। সেই সঙ্গে চলবে তিনতলা নতুন এয়ারপোর্ট থানার কাজ। পুলিশের পক্ষ থেকেও এর বিস্তারিত রিপোর্ট কলকাতা পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে পূর্ণাঙ্গ থানা খুবই প্রয়োজন। বিমানবন্দরের পরিকাঠামো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অনেক বড়ও হবে। তাই নতুন থানা এখনই দরকার। এএআই কর্তৃপক্ষ আমাদের পরিকাঠামো তৈরিও করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।’’ বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায় জানান, যাত্রী, বিমানের সঙ্গে লোকজনের আনাগোনা বাড়ছে বিমানবন্দরে। অনেকই নানা সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। তাই নিরাপত্তা, নজরদারির জন্য থানা থাকাটা জরুরি। আমরা পরিকাঠামো তৈরির কাজে হাত দিচ্ছি। আপাতত তিন-চার মাসের মধ্যে নতুন ভবনের আংশিক কাজ হয়ে যাবে। তার পরে ধাপে ধাপে তিনতলা ভবন হবে। সেখানে বিদেশিদের রেজিস্ট্রেশন ডেক্স, পর্যটকদের হেল্প ডেক্সও থাকবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে বাগডোগরা থানার এলাকা প্রায় ১২৪ স্কোয়ার কিলোমিটার। বায়ুসেনা ঘাঁটি এবং বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে প্রায় ৪২ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকাকে নিয়ে নতুন এয়ারপোর্ট থানার এলাকা বাছাই হয়েছে। বিমানবন্দর লাগোয়া ৩১ নং জাতীয় সড়ক, একাধিক চা বাগান নতুন থানায় জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে বিমানবন্দরের ফাঁড়িতে হাতেগোনা ১ জন অফিসার এবং কয়েকজন কনস্টেবল, সিভিক ভলেন্টিয়ার পালা করে কাজ করেন। কোনও গাড়ি বা টেলিফোন নেই। একজন ইনস্পেক্টর থাকলেও তাঁর বসার কোনও জায়গা নেই। ফাঁড়ির ঘরটি কার্যত ট্রাফিক বুথের মত। সেই জায়গায় এসিপি, ইন্সপেক্টর মিলিয়ে নতুন থানার ফোর্স তৈরি হবে। বরাদ্দ হবে একাধিক গাড়ি।
কয়েকজন পুলিশ অফিসার জানান, সম্প্রতি মাঝরাতে একটি বিমান ওঠানামা করেছিল। রাতে পুলিশ কর্মীদের দাঁড়িয়ে ডিউটি করতে হয়। তেমনই, যাত্রীদের অভিযোগ গাড়ির দালালচক্রের সমস্যা মেটাতে বাগডোগরা থানায় খবর দিতে হয়। প্রায় দু’কিমি দূর থেকে পুলিশ কর্মীদের আসতে সময়ও লাগে।