মোর্চার বিরুদ্ধে কেবল প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোটই পড়েনি। বিজনবাড়ি কলেজের ফল বুঝিয়ে দিল, পাহাড়ের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসছে। বৃহস্পতিবার ওই কলেজের ভোটে টিএমসিপি একাই ১১টি আসনের মধ্যে ১০টি জিতে যাওয়ায় এই কথাটিই এখন পাহাড়ের নানা কোণে ঘুরছে।
এত দিন ওই কলেজের ছাত্র সংসদ বিদ্যার্থী মোর্চারই দখলে ছিল। নির্বাচনে জিতে তাদের বিরোধী শক্তি হিসাবে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের এই জয়ে মোর্চার অন্দরেও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রোনাল্ড দে বলেন, পাহাড়ের যুব সম্প্রদায় যে এখন তৃণমূলের দিকে ঝুঁকছে, সেটাই এই ফলে স্পষ্ট হল। মোর্চা নেতারাও সেই কারণে চিন্তায়। তাঁরাও এইউ জয়ে উদ্বিগ্ন। কেন হার, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মোর্চার সব সম্পাদক রোশন গিরি।
অন্য দিকে মোর্চার অকর্মণ্যতা ও পাহাড়ে উন্নয়নে তাদের ব্যর্থতার ফাঁক গলেই তৃণমূল সেখানে শক্তিবৃদ্ধি করছে বলে মনে করেন সিপিআইএমএলের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার।
তৃণমূল এবং তাদের ছাত্র সংগঠনের দাবি, পাহাড়ের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা এবং প্রচেষ্টা সেখানকার বাসিন্দারা দেখছেন। পাহাড়ের অনেকেই তাই এখন রাজ্যের শাসক দলের দিকেই ঝুঁকছেন। বিজনবাড়ি কলেজের নির্বাচন সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই টিএমসিপি নেতৃত্ব মনে করছেন।
শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যাপক অভিজিৎবাবুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘পাহাড়ে বিভাজন নীতি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পাহাড়ের উন্নয়নে মোর্চার কাজকর্ম না-করতে পারাটা তাদের দিক থেকে পাহাড়বাসীর মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণ হয়ে উঠছে।’’
অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, এখনও পাহাড়ে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, অনেক জায়গায় রাস্তাঘাট নেই। মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়নি। সেটাই গোর্খা জন মুক্তি মোর্চার ক্রমশ পিছিয়ে পড়ার কারণ। তবে কলেজ ভোটের এই ফলাফল থেকে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে যেতে চাননি তিনি।