পুলিশের তাড়া, পুকুরে তলিয়ে মৃত্যু যুবকের

এ দিন মৃতদেহ আনতে গেলে পুলিশকে ঘিরে এলাকার লোকজন তুমুল বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশের পদস্থ কর্তারা গিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিলে উত্তেজনা কমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা কুমারগঞ্জ

কুমারগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০৫:৫৪
Share:

শোকার্ত: কমলেশের পরিবার। কুমারগঞ্জের দিওড়ে। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে জলে ডুবে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থানার দিওড় এলাকার ঘটনা। এরপর বুধবার সকাল থেকে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। কমলেশ বর্মণ (৩৫) নামে স্থানীয় ওই যুবক পালাতে গিয়ে পুকুরের জলে পড়ে মারা যান বলে বাসিন্দাদের দাবি। এ দিন মৃতদেহ আনতে গেলে পুলিশকে ঘিরে এলাকার লোকজন তুমুল বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশের পদস্থ কর্তারা গিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিলে উত্তেজনা কমে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দিওড় বাজারে একটি দোকানের ছাদে বসে স্থানীয় কয়েকজন তাস খেলছিলেন। সেইসময় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ সেখানে হানা দেয়। পুলিশকে দেখেই সকলে ছাদ থেকে নীচে লাফ দিয়ে পালাতে থাকেন। তবে লতিফ মোল্লা নামে এক যুবককে পুলিশ ধরে ফেলে। পুলিশ চলে যাওয়ার পর ওই যুবকেরা সকলে জড়ো হয়ে খেয়াল করেন, তাঁদের মধ্যে থেকে কমলেশ নিখোঁজ। সারারাত ধরে ওই যুবকেরা স্থানীয় বাজার এলাকার লোকজনকে নিয়ে তাঁর খোঁজ করতে থাকেন। গভীর রাত অবধি খোঁজাখুঁজি করেও তাঁরা কমলেশের খোঁজ পাননি।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ যে জায়গায় তাসের আসর বসেছিল, তার ঠিক পাশের পুকুর থেকে কমলেশের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়ে পুকুরের জলে পড়ে কমলেশের মৃত্যু হয়েছে বলে লোকজন দাবি করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, দিওড় বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসর বসছে বলে অভিযোগ ছিল। রাতে ওই জুয়ার আসরের কাছাকাছি পৌঁছতেই পুলিশ দেখে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যান। কাউকে তাড়া করা হয়নি। তবে লতিফ মোল্লা নামে আটক যুবককে এ দিন সকালে পুলিশ ছেড়ে দেয় বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ডেপুটি পুলিশ সুপার অমিত পাল বলেন, ‘‘ওই যুবকের কীভাবে মৃত্যু হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান। এদিকে, পেশায় কাঠমিস্ত্রি মৃত কমলেশ ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও অসুস্থ মা রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আড়াই বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে বিধবা স্ত্রী বন্দনা স্বামীর অকাল মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়েছেন। কমলেশের খুড়তুতো দাদা কানু বর্মণ অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ বড় বড় ক্রিমিনালদের ধরতে পারে না। সারাদিন কাজের পর দোকান কর্মচারীরা তাস খেলছিলেন। দু’টি বড় গাড়ি নিয়ে গিয়ে পুলিশ তাদের ধরতে তাড়া করে। তাছাড়া ভাই কমলেশ সেখানে তাস খেলা দেখছিল। পুলিশের তাড়ায় ভয়ে পালাতে গিয়ে জলে পড়ে কমলেশ মারা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন