মার্চে তিন দিনের রডোডেনড্রন উত্সব হবে সিকিমে।
উত্তর পূর্ব ভারতের একমাত্র ‘ভার্সে রডোডেনড্রন অভয়ারণ্যে’ সময়ের আগে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই ফুল ফুটতে শুরু করেছে ‘গুরাসে’র। এলাকাটি পর্যটন মানচিত্রে ‘ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার’ হিসাবেও পরিচিত। সিকিমের বাসিন্দাদের কাছে অপরূপ সুন্দর রডোডেনড্রন গুরাস নামেই পরিচিত। একে ঘিরে সিকিমের পর্যটন শিল্প অনেকটাই এগিয়েছে। এবার শুধু সিকিম নয়, রডোডেনড্রনের সঙ্গে এ রাজ্যের পর্যটনের মেলবন্ধনকে তুলে ধরতে উদ্যোগী হল সিকিম।
আগামী ২৮ মার্চ থেকে তিন দিনের জন্য পশ্চিম সিকিমের ডেন্টামে পর্যটন উত্সব ‘রডোডেনড্রন ফেস্টিভাল-২০১৫’ আয়োজন করা হয়েছে। সিকিম পর্যটন উন্নয়ন নিগম ছাড়াও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্তত ১৩টি সরকারি-বেসরকারি সংগঠন, কমিটি উত্সবের মূল উদ্যোক্তা। তাদের সহযোগিতায় রয়েছে রাজ্যের ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড টুর অপারেটরর্স অ্যাসোসিয়েশন (এতোয়া)। পশ্চিম সিকিমের উত্তরে এলাকায় উত্সবের সূচনা করবেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। সেই সঙ্গে উদ্বোধন হবে সিকিমের নতুন আকর্ষণ তেনজিং হিলারি পার্ক এবং টাইটানিক রেঁস্তোরা’রও। গ্যাংটক ছাড়াও আজ, শিলিগুড়িতে এবং বৃহস্পতিবার কলকাতায় সরকারিভাবে উত্সবের ঘোষণা করা হবে।
সিকিম সরকারের উপদেষ্টা (পর্যটন) রাজ বসু বলেন, “সিকিমে পর্যটনে প্রথম ধাপে স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এবার পাশ্ববর্তী এলাকাগুলিকে যুক্ত করার কাজ এই উত্সবের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে।” তিনি জানান, সিকিমের রডোডেনড্রন বিশ্ববিখ্যাত। সে জন্য আলাদা অভয়ারণ্য একমাত্র সিকিমেই রয়েছে। তাই তাকে সামনে রেখেই মূলত পর্যটন উত্সবের আয়োজনা হচ্ছে। সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের একাংশকে জুড়ে একটি সার্কিট উত্সবে সামনে তুলে আনা হচ্ছে।
গোটা বিশ্বের রডোডেনড্রন মানচিত্রে সিকিম দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, এশিয়ায় প্রথম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া ৩৮টি জাতির রডোডেনড্রনের মধ্যে ১৯টি রয়েছে সিকিমে। মার্চ থেকে মে মাস অবধি সিকিমের এই ফুলের মরশুম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারসে অভরায়ণ্য তাই রেড পান্ডার পাশাপাপাশি রডোডেনড্রনের জন্য বিখ্যাত। এলাকাটি সিকিমের ম্যানেবং-ডেন্টাম বিধানসভা এলাকার মধ্যে রয়েছে। ফুলের সঙ্গেই এলাকার পর্যটন সম্ভাবনাকেই উত্সবে তুলে ধরা হবে। রাজ্যের তো বটেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ছাড়াও লেখক-লেখিকা, বিশেষজ্ঞরা উত্সবে যোগ দেবেন বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
উত্সব কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা সুশীল তামাঙ্গ জানান, সিকিমে কয়েক বছর আগে আন্তর্জাতিক রডোডেনড্রন ফেস্টিভাল হয়েছে। সেখানে ফুলই ছিল মূল আকর্ষণ। এবার আমরা রডোডেনড্রনের সঙ্গে পর্যটন, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে মিলিয়ে তুলে ধরছি। এবার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিকে একসঙ্গে করে বড় ল্যান্ডস্কেপে পর্যটনকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। এতোয়ার সম্পাদক পার্থ গুহ বলেন, “আমরা সাংগঠনিকভাবে এই উত্সবের সহযোগিতা করছি। এই অঞ্চলে ঘুরতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে সিকিম, উত্তরবঙ্গ একটিই সার্কিট। এবার রডোডেনড্রনকে সামনে রেখে তাকে তুলে ধরাই উত্সবের থিম।”