অধ্যক্ষার ঘরে ঢুকে তাণ্ডব টিএমসিপির

ভর্তি প্রক্রিয়া মিটে গিয়ে স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের টেস্টও শেষ হয়েছে। তবু ছাত্র ভর্তির দাবিতে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিচ্ছিল। তা না মানাতে সেই চাপ না মানাতেই শনিবার দুপুরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার ঘুরে ঢুকে তাণ্ডব চালাল একদল পড়ুয়া। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ একাধিক সদস্য দাঁড়িয়ে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১১
Share:

ভর্তি প্রক্রিয়া মিটে গিয়ে স্নাতক স্তরে প্রথম বর্ষের টেস্টও শেষ হয়েছে। তবু ছাত্র ভর্তির দাবিতে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিচ্ছিল। তা না মানাতে সেই চাপ না মানাতেই শনিবার দুপুরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার ঘুরে ঢুকে তাণ্ডব চালাল একদল পড়ুয়া।

Advertisement

টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ একাধিক সদস্য দাঁড়িয়ে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তাতে। মালদহের কালিয়াচক কলেজের ঘটনা। কলেজ কর্তৃপক্ষ থানাতে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ না করলেও ছাত্র সংসদের কয়েকজন সদস্য হামলায় জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও টিএমসিপির জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, ওই ঘটনায় সংগঠনের কেউ যুক্ত নয়।

শিক্ষকদের অভিযোগ, দুপুর দেড়টা নাগাদ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা বিজয়া মিশ্রের ঘরে ঢুকে পড়ে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে পড়ে তিরিশ জনের একটি দল। দেখা গিয়েছে ছাত্র সংসদের সম্পাদক আসাদুল শেখকেও। ওই দলটি চেয়ার টেবিল ছুঁড়ে ফেলতে শুরু করে। ঘরে থাকা কয়েকজন শিক্ষক হাতে চেয়ার, টেবিল লেগে চোট পান। অধ্যক্ষার টেবিল, চেয়ার, টিভি, কম্পিউটার ও কলেজের গোপন ক্যামেরাও ভেঙে দেওয়া হয়। আতঙ্কিত শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, “ছাত্ররা ফের ভাঙচুর চালাবে বলে শাসিয়ে গিয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, এমন চলতে থাকলে কলেজে পড়াশুনা হবে কী করে?”

Advertisement

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম বর্ষের ভর্তির জন্য সেপ্টেম্বরে তৃতীয় কাউন্সিলিং হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর প্রথম বর্ষের টেস্টও শেষ হয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে সংরক্ষিত আসনে কম পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, মেধা তালিকা অনুযায়ী ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ফলে মেধাসম্পন্ন পড়ুয়া না মেলায় এই আসনগুলিতে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিজয়াদেবী বলেন, “সব নিয়ম মেনেই স্নাতকস্তরে প্রথম বর্ষে অর্নাসে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম বর্ষের টেস্টও হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই নতুন করে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। অথচ কলেজের ছাত্র সংসদ ভর্তির জন্য চাপ দিয়ে চলেছে। তাদের দাবি না মানায় এ দিন আমার ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।”

ছাত্র সংসদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে বললেও, কলেজের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে হামলার ঘটনায় ছাত্র সংসদ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন আসাদুল। তিনি বলেন,“ভর্তি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় এ দিন প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানে ছাত্র সংসদের কোনও বিষয় নেই। বিক্ষোভ শুরুর সময়ে আমি অধ্যক্ষের ঘরে থাকলেও, কিন্তু কর্তৃপক্ষ দাবি না মানায় আমি বেরিয়ে যাই।”

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, “এ দিন ওই কলেজে কী ঘটেছে, আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। পড়ুয়া ভর্তির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কলেজেরই। তাই বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন