অন্ধকার মাঠে অবাধ নেশা, ক্ষোভ শহরে

রাতের অন্ধকারে মাঠে বসছে নেশার আসর। তার প্রমাণও মিলছে মাঠে ছড়িয়ে থাকা খালি মদের বোতল থেকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ শহরে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত চার মাস ধরে রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়া এলাকার টাউনক্লাব মাঠ, মার্চেন্ট ক্লাব মাঠ ও দেবীনগর এলাকার গয়ালাল মাঠ সন্ধ্যার পর দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫১
Share:

রাতের অন্ধকারে মাঠে বসছে নেশার আসর। তার প্রমাণও মিলছে মাঠে ছড়িয়ে থাকা খালি মদের বোতল থেকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জ শহরে।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত চার মাস ধরে রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়া এলাকার টাউনক্লাব মাঠ, মার্চেন্ট ক্লাব মাঠ ও দেবীনগর এলাকার গয়ালাল মাঠ সন্ধ্যার পর দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায়। রাতের অন্ধকারে দল বেঁধে কিছু যুবককে বাইরে থেকে মোটরবাইকেও মাঠে ঢুকতে দেখা যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঠগুলিতে আলোর ব্যবস্থা না থাকার সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। প্রতিদিন সকালে দেখা যাচ্ছে মাঠগুলিতে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকছে খালি মদের বোতল, সিগারেট ও আঠার প্যাকেট এবং বিভিন্ন খাবারের খালি প্যাকেট। দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলেও পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাসিন্দারা।

টাউন-ক্লাব মাঠটি রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক সংস্থার অধীনে রয়েছে। মার্চেন্ট ক্লাব মাঠটি রায়গঞ্জের রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবন হাইস্কুল ও গয়ালাল মাঠটি রায়গঞ্জের দেবীনগর গয়ালাল রামহরি উচ্চ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই মাঠগুলিতে দেলেই দেখা যায়, মোটরবাইকে করে ঢুকছে যুবক-যুবতীরা। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ছোট ছোট জটলা করে চলে মদের আসর। অনেককে আবার বই, খাতা ও স্কুলব্যাগ নিয়ে মাঠে ঢুকতেও দেখা যায়। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর ক্ষোভ, “তিনটি মাঠের চারিদিকে শতাধিক বাড়ি রয়েছে। রাতের অন্ধকারে মাঠগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে। এতে এলাকার পরিবেশ খারাপ হচ্ছে।”

Advertisement

কিন্তু মাঠগুলি রাতে অন্ধকারেই বা ঢেকে থাকছে কেন?

রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট সংস্থার সভাপতি সুশীল গোস্বামী বলেন, “টাকার অভাবে সংস্থার পক্ষে টাউন ক্লাব মাঠে আলোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। সংস্থার তরফে রায়গঞ্জ পুরসভাকে আলোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।” আর্থিক সঙ্কটের কথা জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নীলমাধব নন্দী ও গয়লাল রামহরি উচ্চ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী গোস্বামীও। তাঁরা বলেন, “এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ ও খেলাধুলোর স্বার্থে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। টাকার অভাবে আমরা কাজ করতে পারছি না।”

বাসিন্দাদের দাবি, যাঁরা মাঠের দায়িত্বে আছেন তাঁরা আলো লাগাতে না পারলেও পুরসভার উচিত আলোর ব্যবস্থা করা। পুর-চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত অবশ্য বলেন, “খুব শীঘ্রই পুরসভার তরফে তিনটি মাঠে আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে তিন থেকে চারটি করে ভেপার লাইট লাগানো হবে।”

উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুদীপ বিশ্বাস জানান, তিনটি মাঠে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে কয়েকশো পড়ুয়া ও বাসিন্দা শরীর চর্চা, ব্যায়াম ও খেলাধূলা করেন। শীতের মরশুমে মাঠগুলিতে ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। মাঠগুলির যত্রতত্র মদের বোতল, সিগারেট মত জিনিস ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মাঠের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনিই বাসিন্দারাও সমস্যায় পড়ছেন। পুলিশেরও নজরদারি বাড়ানো দরকার।

রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী জানান, সন্ধ্যার পর মাঠগুলিতে অসামাজিক কার্যকলাপ রুখতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন