অনুপ্রবেশ ও সাহায্য, দিনহাটায় ধৃত চার

জাল ভোটার কার্ড তৈরি করে দিল্লি যাওয়ার অভিযোগে দুই বাংলাদেশি নাগরিক-সহ চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা নাগাদ কোচবিহারের দিনহাটার নয়ারহাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩২
Share:

জাল ভোটার কার্ড তৈরি করে দিল্লি যাওয়ার অভিযোগে দুই বাংলাদেশি নাগরিক-সহ চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা নাগাদ কোচবিহারের দিনহাটার নয়ারহাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মহম্মদ শেখ ফরিদ ওরফে আবু বক্কর সিদ্দিকি, মহম্মদ আব্দুল আলি, সইফুর রহমান এবং মিজানুর রহমান। প্রথম দু’জনের বাড়ি বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার নাক্কারগঞ্জ এলাকায়। মিজানুর দিনহাটার কুশশারহাট ও সইফুর সংলগ্ন কদমতলা এলাকার বাসিন্দা।

জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “ধৃতদের দু’জনকে অনুপ্রবেশকারী আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জন তাদের সাহায্য করেছে। তাদের সঙ্গে অন্য কোনও ঘটনার যোগ রয়েছে কি না সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” দিনহাটা আদালতের সরকারি আইনজীবী শুভব্রত বর্মন জানান, বাংলাদেশি দু’জনকে ছয় দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারক বাকি দু’জনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

ওই ঘটনায় জঙ্গি যোগ রয়েছে কি না সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে কুশশারহাটকে কেন্দ্রে করে বেআইনি ভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের পারাপারের একটি চক্র সেখানে গড়ে উঠেছে বলে নিশ্চিত পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মিজানুর দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক সরবরাহের কাজ করেন। ছ’মাসের বেশি সময় ধরে তিনি দিল্লিতে রয়েছেন। সইফুর রেশন কার্ড তৈরির দালালি করেন। পুলিশের সন্দেহ, দীর্ঘদিন ধরে ধৃতরা ওই এলাকায় জাল ভোটার কার্ড তৈরির কাজ করছেন।

বাংলাদেশি দুজন পুলিশের কাছে দাবি করেছে, গত ১২ ডিসেম্বর দিনহাটার সীমান্ত দিয়েই তাঁরা এপারে আসে। ফরিদ দাবি করেন, তার আত্মীয় আব্দুল আলি অসুস্থ। চিকিৎসক দেখানোর জন্য তাঁরা এ পারে এসেছেন। টাকার অভাব দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা না করেই তাঁরা বাংলাদেশে ফিরছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে ওই চার জন একসঙ্গে নিউ কোচবিহার স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে ৯০০ টাকায় একটি গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা ধাপড়ার হাটে যাচ্ছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় নয়ারহাটের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে গাড়িটিকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশের সন্দেহ দৃঢ় হয়। তাদের থানায় নিয়ে গেলে তারা ভোটার কার্ড বের করে দেখান। তার মধ্যে ২ টি কার্ড জাল রয়েছে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। জেরায় ফরিদ ও আব্দুল বাংলাদেশি বলে স্বীকার করেন। তাদের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ও তিনটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ২ টি ভারতীয় সিমকার্ড এবং একটি বাংলাদেশি সিমকার্ড পাওয়া গিয়েছে।

মিজানুর ও সইফুরের আত্মীয়রা অবশ্য দাবি করেছেন, ওই দুজন কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত নন। মিজানুরের আত্মীয় সেকেন্দার আলির দাবি, “কাজের জন্য মিজানুর দিল্লিতে থাকে। এদিন তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এলাকায় সবাই জানে সে কোনওদিন খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। হয়ত সবাই একই দিকে যাবে জেনে এক গাড়িতে চেপেছিল।” সইফুরের এক আত্মীয় ফুলবাবু মিয়াঁ এক সময় ওই এলাকার সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, “সইফুর ভাল ছেলে বলেই জানি। ঠিক কি হয়েছে বুঝতে পারছি না।” কুশশারহাটের ওই এলাকার বেশিরভাগ সীমান্ত কাটাতার দিয়ে ঘেরা রয়েছে। এক কিলোমিটার জায়গায় কোনও কাঁটাতার নেই। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ওই অংশ দিয়েই চলে চোরাকারবার ও মানুষ পারাপার। এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবুল হোসেন বলেন, “সইফুরের বিরুদ্ধে নানা সময় বিভিন্ন রকম অভিযোগ শুনেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন