উদ্বিগ্ন কেন্দ্র

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আরও রক্ষী উত্তরে

রাজ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএফের আরও এক ব্যাটেলিয়ান পাঠাচ্ছে উত্তরবঙ্গে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে বাড়তি ব্যাটেলিয়ান উত্তরবঙ্গে পৌঁছিয়ে কাজ শুরু করে দেবে। বিএসএফ সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত প্রায় ৯৪০ কিলোমিটার সীমান্তে নজরদারি চালানোর জন্য বর্তমানে বিএসএফের ১৬টি ব্যাটেলিয়ান রয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৭
Share:

রাজ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএফের আরও এক ব্যাটেলিয়ান পাঠাচ্ছে উত্তরবঙ্গে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে বাড়তি ব্যাটেলিয়ান উত্তরবঙ্গে পৌঁছিয়ে কাজ শুরু করে দেবে। বিএসএফ সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত প্রায় ৯৪০ কিলোমিটার সীমান্তে নজরদারি চালানোর জন্য বর্তমানে বিএসএফের ১৬টি ব্যাটেলিয়ান রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর জন্য দ্রুত বাড়তি আরও এক ব্যাটেলিয়ান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। উত্তরবঙ্গে অনুপ্রবেশ নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর একটি রিপোর্ট পাঠায় বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে বিএসএফের আভ্যন্তরীণ সংস্কারের কিছু পুরোনো রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই কেন্দ্রের নতুন সরকার বাড়তি বাহিনী পাঠানোয় দেরি করতে চাইছে না বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

বিএসএফের প্রতি ব্যাটেলিয়ানে অফিসার থেকে জওয়ান সব মিলিয়ে ১২০০ জনের দল থাকে। প্রশাসনিক নানা কাজ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বাদ দিলে সীমান্তে নজরদারির জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বেশি পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকায় নজরদারি চালাতে যে সমস্যার হচ্ছে সে কথা একাধিকবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরকে জানিয়েছে বিএসএফ। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে আরও একটি ব্যাটেলিয়ন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পরে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই অনুযায়ী আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বিএসএফের সদরে নতুন ব্যাটেলিয়ানের ‘রিপোর্ট’ করবে।

বিএসএফের উত্তরবঙ্গের আইজি এস কে সুদ বলেন, “আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই নতুন ব্যাটেলিয়ান চলে আসবে। যার ফলে মোট ব্যাটেলিয়ানের সংখ্যা হবে ১৭। বাড়তি বাহিনী পেলে নজরদারিতে সুবিধে হবে।”

Advertisement

কেন উত্তরবঙ্গের জন্য বাড়তি এক ব্যাটেলিয়ান পাঠাচ্ছে কেন্দ্র?

উত্তরবঙ্গের বিএসএফের সদর শিলিগুড়ি লাগোয়া কদমতলা থেকে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, দুই দিনাজপুর,এবং কোচবিহারের একাংশে সীমান্তে নজরদারির কাজ চালানো হয়। পাঁচটি জেলায় অন্তত ৯৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে কদমতলা সদরের নজরদারিতে। যার মধ্যে একশো কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই এলাকাগুলি অপরাধ এবং অনুপ্রবেশের অন্যতম ঘাঁটি হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ির বিতর্কিত এলাকায় এবং কোচবিহারের কয়েকটি ছিটমহল এলাকায় নজরদারির জন্য বেশি সংখ্যক জওয়ানের প্রয়োজন হয়। যার ফলে লাগোয়া এলাকাগুলির নজরদারিতে খামতি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এই সুযোগেই এলাকাগুলি দিয়ে অনুপ্রবেশের সমস্যা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি রিপোর্টও। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত ছ’মাসে শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলাতে অবৈধ ভাবে সীমানা পার হওয়ার অভিযোগে অন্তত দেড়শ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে সিংহভাগকেই বিএসএফ হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। চোরাচালানের থেকেও অনুপ্রবেশ সমস্যা এই এলাকায় বেড়ে চলেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। তারপরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে দ্রুত বাড়তি ব্যাটেলিয়ান পাঠানোর নির্দেশ এসেছে।

বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কদমতলা সদর দফতরের আওতায় থাকা এলাকায়, শুধু সীমান্তে নজরদারির জন্য কমবেশি সাড়ে ছ’ হাজার জওয়ান রয়েছে। সে হিসেবে এক কিলোমিটার সীমান্তে নজরদারির জন্য গড়পরতা সাত জন করে জওয়ান মোতায়েন করা যায়। উত্তরবঙ্গের বেরুবাড়ি, ফুলবাড়ি, ইসলামপুর, চ্যাংরাবান্দা, হিলির মতো কিছু ম্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকা রয়েছে। যেখানে নজরদারির জন্য অন্তত দ্বিগুণ পরিমানে জওয়ানের প্রয়োজন। না হলে নজরদারিতে খামতি থাকে বলেই বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন