অনুমতি ছাড়াই পরীক্ষা ধৃতের, বিতর্ক

বিচার বিভাগের হেফাজতে অভিযুক্তকে পাঠানোর প্রায় আড়াই ঘন্টা পর আদালতের ‘অনুমতি’ ছাড়াই ধৃতের মেডিক্যাল টেস্ট করানো নিয়ে পুলিশ ও আইনজীবী মহলে আলোড়ন পড়েছে। গত শনিবার শিলিগুড়ি থানার একটি চুরির মামলার নথি দেখতে গিয়ে বিষয়টি আদালতের গোচরে এসেছে বলে আইনজীবীদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫০
Share:

বিচার বিভাগের হেফাজতে অভিযুক্তকে পাঠানোর প্রায় আড়াই ঘন্টা পর আদালতের ‘অনুমতি’ ছাড়াই ধৃতের মেডিক্যাল টেস্ট করানো নিয়ে পুলিশ ও আইনজীবী মহলে আলোড়ন পড়েছে। গত শনিবার শিলিগুড়ি থানার একটি চুরির মামলার নথি দেখতে গিয়ে বিষয়টি আদালতের গোচরে এসেছে বলে আইনজীবীদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে হেনস্থার মামলার রিপোর্টে শিলিগুড়ি থানার আইসি ‘আইন শৃঙ্খলা’র অবনতির আশঙ্কায় ধৃতের জামিনের বিরোধিতা করায় বিচারকের কাছে ভর্তসিতও হন তিনি।

Advertisement

আদালত সূত্রের খবর, অভিযুক্তের আইনজীবী ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম নীলাঞ্জন মৌলিককে লিখিতভাবে জানানোর পর বিচারক সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেন। তার পরে বিচারক আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। আজ, সোমবার মামলার তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে হাজির হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে ধৃতের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার এবং থানার আইসি বিকাশকান্ত দে’কে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “আইন মেনেই সব থানা ও অফিসারকে কাজ করতে হবে। কেউ দোষ করলে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।”

চুরির মামলার অভিযুক্তের আইনজীবী সন্দীপ মণ্ডলের অভিযোগ, “কাগজপত্রে যে সময় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, তার অন্তত ১২ ঘন্টা আগে অভিযুক্তকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়। এই নিয়ে আলাদা একটি অভিযোগও আদালতে করা হয়। তাই তড়িঘড়ি গ্রেফতার করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে পাঠানোর কথা বলে থানা সময় উল্লেখ করে রিপোর্ট দেয়। মেডিক্যাল টেস্টের তথ্য আদালতে জমা পড়তেই সবাই অবাক হয়ে গিয়েছে।” তিনি জানান, আর তাতে দেখা যাচ্ছে এতো বিচার বিভাগের হেফাজতে থাকা আসামীকে অনুমতি ছাড়া নিয়ে যাওয়ার মত ঘটনা।

Advertisement

পুলিশের গোলমালের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মামলা’র সরকারি আইনজীবী সুদীপ বসুনিয়া। তিনি বলেন, “পুলিশ রিপোর্টে আসামী পেশের সময় আর মেডিক্যাল টেস্টের সময় ফারাক রয়েছে বলে আইনজীবীরা আদালাতে জানিয়েছেন। আগে মেডিক্যাল করিয়ে অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করানোটাই নিয়ম। আমি তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি রিপোর্ট লিখতে ভুল হয়েছে বলে দাবি করেছেন।”

আদালত ও পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৭ অক্টোবর শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডের একটি ছাতা এবং কৃত্রিম বালিশের দোকানে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা চুরি হয় বলে অভিযোগ। থানার তথ্য অনুসারে, ওইদিন রাত সাড়ে ৮টা অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে ১১টা নাগাদ অভিযুক্ত একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরদিন, ২৮ অক্টোবর সকাল ১০টা তাঁকে আদালতে পেশ করা হল বলে পুলিশ রিপোর্ট দিয়ে দেয়। ধৃতকে আদালতের নির্দেশে পুলিশ চারদিনের হেফাজতেও নিয়ে নেয়। শনিবার নতুন করে মামলা শুনানিতে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়েছিল দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। আদালতের পুলিশ সেকশনের তথ্য অনুসারেও দুপুর সাড়ে ১২টার পরেই অভিযুক্তকে আদালতে আনা হয়েছিল। শিলিগুড়ি থানার আইসি’র অবশ্য দাবি, “থানা থেকে অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানোর সময়টার কথা লেখা হয়েছিল। তার পরে মেডিক্যাল টেস্ট হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন