অর্পিতা ঘোষের প্রচারে ব্রাত্য বসু, সুবোধ সরকার-সহ বিশিষ্টজনেরা। বালুরঘাটে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি।
তৃণমূলপন্থী বিশিষ্টজন সুবোধ সরকারকে সঙ্গে নিয়ে বালুরঘাটে গিয়ে অর্পিতা ঘোষের প্রচার করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ‘বহিরাগত’ বলে সম্প্রতি দলের মধ্যেও যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছিল, সে প্রসঙ্গও উঠল। বিশিষ্টজনেদের যুক্তি, অর্পিতা নাটকের মেয়ে, বালুরঘাট নাটকের শহর। তাই অর্পিতা বালুরঘাটের ‘ঘরেরই মেয়ে’।
রবিবার বালুরঘাটে অর্পিতার প্রচারে উপস্থিত ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্র ও বিভাস চক্রবর্তীও। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর প্রয়াসেই অর্পিতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সিনেমা পরিচালক অরিন্দম শীলও। তিনি অবশ্য এ দিন বালুরঘাটে যেতে পারেননি।
এ দিন পথসভার সঞ্চালক ছিলেন ব্রাত্য। শুরুতেই তিনি দাবি করেন, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এ রাজ্যে থিয়েটার এবং নাটকের বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে। বাম জামানায় যেটা ছিল না। অর্পিতার মধ্যে নাট্য আন্দোলন থেকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করার মানসিকতা রয়েছে। এ দিন ওই নাট্যব্যক্তিত্বদের বক্তব্যে ঘুরে ফিরেই ‘বহিরাগত’ প্রসঙ্গ আসে। সুবোধবাবু বলেন, “ভূমিপুত্র আর বহিরাগত বলে কিছু হয় না। কারণ গোটা নাট্যজগৎটাই পরিবারের মতো। আর বালুরঘাট নাটকেরই শহর।” আবৃত্তির ঢঙে তিনি বলেন, “আমরা যদি বলি, এসো অর্পিতা, উঠোনে বোসো, মুড়ি বাতাসা দেব। যে রান্নাঘরের পাশে বসেছো, সেটা তো তোমারই বাড়ি, তুমি সেই বাড়ির মেয়ে।” সুবোধবাবুর সংযোজন, “এই সংস্কৃতিই তো বাংলার চিরাচরিত। যেটা এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ফিরে এসেছে।”
বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থানা মোড়ে পথসভা চলে। সেখানে অনেকেই বক্তব্য রাখেন। ওই সময় মনোজবাবু এবং বিভাসবাবুরা তপনে সভা করছিলেন। এরপরে সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ সকলে মিলিত হন শহরের চকভবানী এলাকার পুরসভার একটি সভাগৃহে। সেখানে শহর তথা জেলার নাগরিকদের ডাকা হয়েছিল। উদ্যোক্তারা অবশ্য এই সভাকে রাজনৈতিক সভা নয় বলে দাবি করেন। তবে অর্পিতার সমর্থনে সব বক্তাই ভোট-ই চান। মনোজবাবু বলেন, “শিল্প সংস্কৃতি এবং চলচ্চিত্র জগতের মানুষকে প্রার্থী করে মুখ্যমন্ত্রী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আগে কখনও
এমন হয়নি। অর্পিতাও সে রকমই একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। ওঁর মধ্যে মুগ্ধতা আছে। ওঁর সঙ্গে মাঝেমধ্যে আমার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল এটা ঠিকই। কিন্তু ওঁর মধ্যে কাজ করার ইচ্ছে এবং দাপট রয়েছে।” এ দিনের সভায় পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির সম্পাদক সত্য ভাদুড়ি বলেন, “এক সময়ে শিশু কিশোর অ্যাকাডেমিতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে বর্তমান সরকার অর্পিতাকে নিয়ে আসে। তাতে প্রথম দিকে খটকা লাগলেও পরে অর্পিতা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছে।”
এ দিনের নাগরিক সভাতেও সঞ্চালনা করেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই সভাতেও অর্পিতাকে ‘ঘরের মেয়ে’ বলে পরিচয় দিয়ে ভোট দিতে বলে সভা শেষ করেন ব্রাত্যবাবু।