সাংসদ কোটায় উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা খরচে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছেন বালুরঘাটের তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী ২০১৪-১৫ সালে পাওয়া ৪ কোটি ৭৯ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকার মধ্যে বালুরঘাটের সাংসদ ৯০ শতাংশের বেশি টাকা খরচ করে ফেলেছেন। আগামী ২০১৫-১৬ অর্থিক বছরের প্রথম দফার আড়াই কোটি টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘কাজের গতি বাড়ায় সুফল মিলেছে।’’
ইতিমধ্যে রাস্তা তৈরি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে উন্নতি, অ্যাম্বুল্যান্স প্রদানের মতো ৩০টি প্রকল্পের কাজ শেষ। আরও ৪৬টি প্রকল্পের কাজ চলছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেগুলির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক অভীককুমার দাস জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারি স্তরে প্রকল্প রূপায়ণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, সাংসদ প্রতি মাসে কাজের অগ্রগতি ও সমস্যা নিয়ে খোঁজ নেন এবং বৈঠক করেন। তাতে কাজে স্বচ্ছতার পাশাপাশি গতি বড়েছে।’’
দক্ষিণ দিনাজপুরের ৮টি ব্লকের সঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লক বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের সঙ্গেও সাংসদ অর্পিতাদেবী নিয়মিত প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ায় ওই ব্লকে প্রায় ৯ লক্ষ এবং প্রায় ৪ লক্ষ টাকায় দু’টি রাস্তার কাজও শেষ হয়েছে। চলছে আরও বেশ কিছু উন্নয়নের কর্মকাণ্ড। বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতাদেবীর বক্তব্য, ‘‘প্রকল্পের সুপারিশ করে বসে থাকিনি। অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ ফেলে রাখা যাবে না বলে প্রথম থেকেই মনিটরিং শুরু করি। ফলে কাজের গতি বেড়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে বালুরঘাটের সাংসদ জেলায় মোট ৮৬টি প্রকল্পের সুপারিশ করেছিলেন। তার মধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন পায় ৭৬টি প্রকল্প। সাংসদ কোটায় প্রাপ্ত ওই ৪ কোটি ৭৯ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকার মধ্যে প্রায় ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। ওই অর্থে জেলার ৮টি ব্লকে মোট ১৫টি সিমেন্ট ঢালাইয়ের রাস্তা তৈরি হয়েছে। ৪টি হাইস্কুলে টেবিল চেয়ার দেওয়া হয়েছে। হরিরামপুরের বানিহারা হাইস্কুলে জেনারেটর এবং গঙ্গারামপুরের রবীন্দ্রভবনে ট্রান্সফর্মার স্থাপন করা হয়েছে। হরিরামপুরে ইটসোলিং রাস্তা তৈরি এবং কুশমন্ডি পঞ্চায়েত সমিতিকে অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে। বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র বসানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসার সরঞ্জাম। গঙ্গারামপুর হাসপাতালে তৈরি হয়েছে রোগীর আত্মীয়দের জন্য যাত্রীশেড। বংশীহারিতে বালিকাদের মাদ্রাসায় শৌচালয় তৈরির পাশাপাশি ৩টি জায়গায় শ্মশানের উন্নয়ন ও শ্মশানযাত্রীদের প্রতীক্ষালয় তৈরি করা হয়েছে।
হিলি ব্লকে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অডিটোরিয়াম তৈরির কাজ চলছে। হিলি আরএন হাইস্কুলে শ্রেণীকক্ষ সহ শিক্ষা সামগ্রীর উন্নয়ন খাতে ১০ লক্ষ টাকা, হিলি ব্লকে ৬টি এলাকায় বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানীয় জলের যন্ত্র বসানোর প্রকল্পে কাজ চলছে। এ ছাড়া তপন পঞ্চায়েত সমিতিকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স, বালুরঘাটে জেলা সংগ্রহশালায় ৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পানীয় জল প্রকল্পের মতো একগুচ্ছ উন্নয়নের কাজ আগামী ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।