পথে সন্দীপকুমার শর্মা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় ৬ মাস ধরে বেহাল জাতীয় সড়ক। রোজই ঘটছে দুর্ঘটনা। দু’দিন আগেই পা হড়কে গাড়ির নীচে মৃত্যু হয়েছে এক তরুণী শিক্ষিকার। সেই ঘটনাকে সামনে রেখে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহের প্রকল্প আধিকারিককে অফিসের বাইরে এনে বেহাল রাস্তায় প্রায় ৫০০ মিটার হাঁটতে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠল টিএমসিপির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ির ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দফতরে।
ঘন্টাখানেক বিক্ষোভের পরে ওই অফিসারকে বেহাল রাস্তায় হাঁটার কথা বলা হয়। তিনি প্রথমে রাজি হননি। পরে রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হন প্রকল্প আধিকারিক সন্দীপকুমার শর্মা। তাঁর দাবি, “চাপের বিষয় নেই। আমরা অভিযোগ পেলে এলাকায় গিয়ে হেঁটেই পরিদর্শন করি। শীঘ্রই মেরামতির কাজ হবে। এতদিন টাকার সমস্যা ছিল।”
এ ভাবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দলের একাংশ মনে করেন, এভাবে আধিকারিকদের রাস্তায় টেনে বার করার কৌশল প্রশাসনের কোনও গাফিলতির ক্ষেত্রে প্রয়োগ হলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। টিএমসিপির এক নেতা জানান, এমন চললে তো কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্কুলে প্রধান শিক্ষককে অফিস থেকে টেনে বার করে হাঁটানোর ঘটনা ঘটলে কিছু বলার মতো মুখ থাকবে না।
তবে টিএমসিপির জেলা সভাপতি প্রসেনজিত্ দাস মনে করেন, তাঁরা অন্যায় কিছু করেননি। তাঁর দাবি, “য় বাসিন্দাদের কী সমস্যা হচ্ছে, সেটা দেখতে রাস্তায় যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। চাপ দেওয়া হয়নি। তিনি ১৫ দিন সময় চেয়েছেন। রাস্তা সংস্কার করা না হলে জেলা জুড়ে আন্দোলন হবে।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মানছেন, ওই ৫০০ মিটার রাস্তার অবস্থা বেহাল। তাঁরা জানাচ্ছেন, মালদহ শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কের অংশটি ফোর লেন হচ্ছে না। তাতে যানজট বাড়বে শহরে। সে জন্য ফোর লেন বাইপাস তৈরির কাজ চলছে। প্রস্তাবিত বাইপাসটি ইংরেজবাজারের সুস্থানি মোড় থেকে পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ হচ্ছে।
কিন্তু, বাইপাস হচ্ছে বলে জাতীয় সড়কের বেহাল অংশ মেরামত করা যাবে না কেন? তা নিয়ে গাফিলতিই বা কেন? জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, টাকা পেতে দেরি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।