আন্দোলনে বিক্রেতারা, মাছ অমিল বাজারে

তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত খুচরো মাছ ব্যবসায়ীদের সংগঠন মাছ কেনা বন্ধ করে আন্দোলনে নামায় মাছের আকাল দেখা দেয় শিলিগুড়ি শহর জুড়ে। সোমবার সকাল আটটা থেকে প্রায় দু’ঘন্টা দার্জিলিং জেলা ও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি খুচরো মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা শিলিগুড়ি পাইকারি বাজারের সামনে সভা করেন। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া পাইকারি বাজারের দু’ নম্বর গেটের সামনে এই সভা ও মিছিলেন জেরে পাইকারি মাছ বাজার কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share:

তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত খুচরো মাছ ব্যবসায়ীদের সংগঠন মাছ কেনা বন্ধ করে আন্দোলনে নামায় মাছের আকাল দেখা দেয় শিলিগুড়ি শহর জুড়ে। সোমবার সকাল আটটা থেকে প্রায় দু’ঘন্টা দার্জিলিং জেলা ও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি খুচরো মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা শিলিগুড়ি পাইকারি বাজারের সামনে সভা করেন। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া পাইকারি বাজারের দু’ নম্বর গেটের সামনে এই সভা ও মিছিলেন জেরে পাইকারি মাছ বাজার কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সাতসকালে মাছের নিলাম না হওয়ায় শহরের বাজারগুলিতে অধিকাংশ মাছ বিক্রেতার দেখা মেলেনি। অভিযোগ, কয়েকটি বাজারে হাতে গোনা কয়েকজন বিক্রেতা চড়া দামে বিক্রি করেছেন নানা ধরণের মাছ। তাই অন্য দিনের তুলনায় বেশি দামে মাছ কিনতে বাধ্য হন ক্রেতারা।

Advertisement

সকাল ১১টার পর সভা বন্ধ হলেও পাইকারি বাজারে বেশির ভাগ আড়ত বন্ধ ছিল। সকালে কোথাও নিলাম হয়নি বলে মাছের আড়তদারদের দাবি। তাঁরা জানিয়েছেন, পরবর্তীতে হাতে গোনা কয়েকটি আড়তে সামান্য পরিমাণে মাছ বিক্রি হয়েছে। এমনিতেই রবিবার নিলাম বন্ধ থাকে। তার পরে সপ্তাহের শুরুতেই, ফের নিলাম বন্ধ থাকায় শহরে মাছের সরবরাহ একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি বিহার, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাছও জমে গিয়েছে। তার মধ্যে কিছু নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শিলিগুড়ি পাইকারি বাজার কমিটির সচিব সুব্রত দাস বলেন, “বাজারের বাইরে আন্দোলন হয়েছে বলে শুনেছি। খুচরো ব্যবসায়ীরা মাছ না কিনলে তো আড়তদারদের কিছু করার নেই। তাই বেচাকেনা ঠিকমত হয়নি। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।”

শহরের বাসিন্দাদের মতই সমস্যায় পড়েন সিকিম এবং দার্জিলিং পাহাড় থেকে আসা ক্রেতারাও। অভিযোগ, শহর এবং লাগোয়া বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কিছু ক্রেতাকে মাছ কিনতে দেওয়া হয়নি। গেটে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। তৃণমূলের সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক গৌতম সাহা ও বিশ্বনাথ ভৌমিকের অভিযোগ, “আড়তদারেরা ইচ্ছে মতো ব্যবসা করছেন। বাজারে অধিকাংশ মাপার কাটা-যন্ত্র ঠিক নেই। প্রতি কিলোগ্রামে ৫০ পয়সা ছুট দেওয়ার কথা থাকলেও তা ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে না।” খুচরো ব্যবসায়ীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ি হোলসেল ফিস মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপি চৌধুরী। তাঁর দাবি, “নিয়ম মেনেই ব্যবসা করি। খুচরা ব্যবসায়ীরা হুটহাট আন্দোলন করেন। ওঁরা মাছ না কেনায় বাজারের অধিকাংশ আড়ত বন্ধ ছিল। শহরে মাছ পৌঁছায়নি। অনেক মাছ নষ্টও হয়ে যেতে পারে।”

Advertisement

যদিও তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি অরূপরতন ঘোষের বক্তব্য, “আমরা বন্ধের রাজনীতি করি না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় নিজেদের রোজগার বন্ধ রেখে খুচরো ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন দেখে মাছের আড়তদাররা বাজার বন্ধ করে রেখেছিল।” শিলিগুড়ি পাইকারি বাজারে দু’শো জনের মত আড়তদার রয়েছেন। খুচরা মাছ ব্যবসায়ী প্রায় ছ’ হাজার। প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত নিলাম হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন