আলোচনা না করেই কাজ করছেন মন্ত্রী, অভিযোগ অশোকের

পুলিশকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব রামঘাটে বৈদ্যুতিক শ্মশানঘাটের কাজ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। রবিবার সকাল থেকে এর প্রতিবাদ করে বর্ধমান রোডের জলপাইমোড়ে এলাকার নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২৩
Share:

পুলিশকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব রামঘাটে বৈদ্যুতিক শ্মশানঘাটের কাজ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। রবিবার সকাল থেকে এর প্রতিবাদ করে বর্ধমান রোডের জলপাইমোড়ে এলাকার নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এদিন বিক্ষোভের শুরুতেই অবস্থান মঞ্চে যোগ দেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। বাসিন্দাদের আন্দোলনকে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের তরফে সমর্থন করার কথা বলে তিনি ওই অভিযোগ করেন।

Advertisement

অশোকবাবুর অভিযোগ, “উন্নয়নের কাজ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে করতে হয়। কিন্তু উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এসবের তোয়াক্কা করেন না। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে আলোচনা না করাই তিনি প্রকল্পের ঘোষণা করেন। আর এখন মানুষের প্রতিরোধের মুখে পড়ে তিনি পুলিশ সামনে রেখে কাজ করতে চাইছেন। গণতান্ত্রিক উপায়েই মানুষ এর জবাব দেবে।” তিনি জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী মানুষকে ভয় পাচ্ছেন। তাই তিনি ২-৩ ভ্যান পুলিশ নিয়ে ঘুরছেন। আবার উন্নয়নের কাজও পুলিশ দিয়ে করতে চাইছেন। ওঁর উচিত প্রকল্পের সিদ্ধান্ত আপাতত প্রত্যাহার করে এলাকার মানুষের সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসা।

এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ অভিযোগ এবং রামঘাট প্রকল্প নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও গত সপ্তাহে তিনি অবশ্য জানিয়েছিলেন, এলাকার বাসিন্দাদের বোঝানো ছাড়াও আলোচনায় বসা হবে।

Advertisement

রাঘঘাটে ওই চুল্লি প্রকল্পের বিরোধিতা করে ওই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার অবধি প্রতিবাদ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা অবধি ওই অবস্থান চলবে বলে নাগরিক মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে। এদিন অবস্থানে স্থানীয় কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম নেতাদেরও দেখা গিয়েছে। পরে অশোকবাবু এবং জেলা ডিওয়াইএফআই নেতারা তাতে যোগ দেন। আজ, সোমবার মঞ্চে জেলা কংগ্রেস নেতাদের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

মঞ্চের তরফে মহানন্দ মণ্ডল বলেন, “মন্ত্রী পুলিশ দিয়ে যা করতে চাইছেন তা গণতান্ত্রিক উপায়ে রোখা হবে। আমরা অনশন কমর্সূচি ছাড়াও আইনের পথেও যাব।” তাঁর অভিযোগ, “বিভিন্ন মহলের তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে হয়েছে। নানা কথা বলা হচ্ছে। আমি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি, সব কিছুই এলাকার মানুষ এবং নাগরিক মঞ্চের সঙ্গেই আলোচনা করতে হবে।”

দূষণের কথা বলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রামঘাটে বিদ্যুতিক চুল্লির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে এলাকার একাংশ বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের কয়েকজনকে আলোচনার জন্য ডেকে নেন মন্ত্রী। মহানন্দবাবুদের অভিযোগ, “আলোচনার সময় মন্ত্রী দলবল নিয়ে তাঁকে চড়, লাথি মারেন। পুলিশে জানানোর পর মামলাও হলেও আজ অবধি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে মন্ত্রীর দফতরের করা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের গ্রেফতার হতে হয়েছে।” ওইদিনই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে সরকারি কাজে বাধা এবং মন্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ মহানন্দ মণ্ডল, কংগ্রেস নেতা রাজেশ যাদবকে গ্রেফতারও করে। এর পরেই এলাকার তৃণমূল বাদে সবদলের নেতারা বাসিন্দাদের নিয়ে নাগরিক মঞ্চ গড়ে আন্দোলনে নামেন।

গত শুক্রবার চুল্লির জমি জরিপের সময় বাসিন্দারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানান। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও হয়। এ দিনও শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির নির্মাণ কাজ জারি রেখেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। রামঘাটে মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনীও। নাগরিক মঞ্চের অভিযোগ, “গত শুক্রবার থেকে অবস্থান মঞ্চের জন্য অনুমতি চেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় তা মেলে। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।” যদিও পুলিশের দাবি, “গত শনিবার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তাই আইন শৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে এলাকায় পুলিশ রাখা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement