চা শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি বেড়েছে, সামগ্রিক ভাবে চা বাগানের পরিধিও বহুগুণে বেড়েছে। কিন্তু এত সবের পরেও তুলনামূলক ভাবে কমেছে আয় এবং উৎপাদন। আর এতেই সংকট তৈরি হচ্ছে চা শিল্পে। তবে ওই সভাতেই উঠে এসেছে অন্য মতও। চা শিল্প লাভজনক বলেও জানানো হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে চা শিল্পের আকাশে যখন মেঘ জমেছে, তখন চা বিষয়ক এক আলোচনাসভা আয়োজিত হয় ডুয়ার্সের মালবাজারের পরিমল মিত্র স্মৃতি কলেজে। সেখানে উৎপাদন কমছে দাবি করে এমনই মন্তব্য করেন উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের বিশেষজ্ঞ হিসাবে পরিচিত রামঅবতার শর্মা। বুধবার মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি কলেজের ইতিহাস বিভাগের আয়োজনে ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতে উত্তরের চা বলয় নিয়ে আলোচনাসভাটি আয়োজিত হয়। মূল তিন আমন্ত্রিত বক্তা হিসাবে যোগ দেন রামঅবতার শর্মা, প্রাবন্ধিক সৌমেন নাগ এবং গবেষক আনন্দগোপাল ঘোষ। রামঅবতার শর্মা দাবি করেন, পরিসংখ্যানের নিরিখে যত সময় এগোচ্ছে ততই উৎপাদন কমছে চা বাগানগুলির। জলবায়ুর পরিবর্তন, মাটির গুণগত মান হ্রাস এবং আধুনিক প্রযুক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে নানা রকম রোগপোকার প্রাদুর্ভাব এই তিন কারণকে দায়ী করেন তিনি। চা বাগানের চার দশকের অভিজ্ঞতা থাকা রামঅবতার শর্মার কথায়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ডুয়ার্স তথা ভারতের চা পিছিয়ে পড়েছে। পঞ্চাশের দশকে যেখানে ৯০ শতাংশ চা বিদেশের বাজারে চলে যেত, সেখানে এখন তা অর্ধেকেরও নীচে নেমে এসেছে।
তবে রামঅবতারের সব যুক্তিকে মানতে পারেননি সৌমেনবাবু। তাঁর কথায়, বাগান নিয়ে এখন মালিকদের যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে এবং সেটি চা শিল্প লাভদায়ক জায়গায় রয়েছে বলেই। তবে বন্ধ এবং অচল বাগান স্বাভাবিক করতে সমবায় গড়ে তোলাটাই একমাত্র পথ বলে দাবি সৌমেনবাবুর। তবে ডুয়ার্সের চা শিল্পে বাঙালিরা পিছিয়ে পড়েছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন আনন্দগোপাল ঘোষ। তাঁর কথায় একসময় জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট উকিল পরিবারগুলো থেকে চা বাগিচা পত্তনে বিশেষ ভূমিকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনপুরুষের পর সে বাগানগুলো থেকে জলপাইগুড়ির মালিকেরা পিছিয়ে পড়ে।