ফুটপাথ বেদখল কোচবিহারে
ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে মাইকে প্রচার পুরসভার প্রতি বছরের নাটক। ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে প্রতি বছর পুরসভা অভিযান শুরু করে ঠিকই, কিন্তু বেশি দূর এগোতে পারে না। কারণ দলমতনির্বিশেষে অভিযান শুরুর আগে হকার্স উচ্ছেদের পরিকল্পনা ও তার সমাধান সম্পর্কিত আলোচনা জরুরি। এখন হকার্স ইউনিয়ন যদি তৃণমূলের হয় তা হলে পুরপিতার ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ দশা হয়। কোচবিহার শহরকে সুন্দর ও পরিষ্কার করে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই নজর দিতে হবে ভবানীগঞ্জ বাজার ও রাস্তার দিকে। যানজট তো রয়েইছে, পাশাপাশি রাস্তার দু’পাশে ছোট ব্যবসায়ীদের শাকসব্জি, ফুলফলের দোকান। পথচারীদের যাতায়াতের পথ নেই। রাস্তায় পাথর, বালি ও মেশিন বসিয়ে উঠছে ইমারত।
কারওর হেলদোল নেই। দ্বিতীয়ত, পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়াতে রাস্তার ধারে দিনের পর দিন পাঞ্জাবি ট্রাকগুলি দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে এবং মাল লোডিং-আনলোডিং করা হচ্ছে। তৃতীয়ত, মীনকুমারী চৌপথি থেকে বাদুড়বাগানের রাস্তায় মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীরা তেলের ট্রাক তাদের দোকানের সামনেই দাঁড় করিয়ে তেলের টিন, চালের বস্তা লোডিং-আনলোডিং করছে। ফলে রাস্তায় যানজট হচ্ছে। এ ছাড়া ইলেকট্রিসিটির অফিসের রাস্তায় ফুটপাথ দখল করে রয়েছে ফুলের দোকান, মুরগির মাংসের দোকান, পুরোনো কাগজপত্র কেনাবেচার দোকান ও সিডি বিক্রির দোকান। এ সবের দিকে নজর দেওয়া উচিত।
চতুর্থত, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দু’পাশে ট্যাক্সি, মারুতি, সাফারি, বোলেরো ইত্যাদি গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে। এগুলির উচ্ছেদ দরকার। আবার হাসপাতালের রাস্তায় ফল-ফুলের দোকান, ছোট ছোট হোটেল ইত্যাদি নানা রকমের দোকানগুলির উচ্ছেদ হওয়া দরকার।
এছাড়া অটোস্ট্যান্ড ভবানী সিনেমা থেকে বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজ, দেশবন্ধু মার্কেটের অটোস্ট্যান্ড, ধর্মশালার পাশে ট্যাক্সিস্ট্যান্ডগুলি অবৈধ ভাবে গজিয়ে উঠেছে কোনও রাজনৈতিক দলের মদতে। অতএব কোচবিহার শহরকে সুন্দর করতে হলে উপরিউক্ত বিষয়গুলির ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে । সেটা সার্থক ভাবে করতে পারলে তবেই শহর সুন্দর হবে, নাহলে নয়।
রাজিত সরখেল, রাজবাড়ি হাউজিং কমপ্লেক্স, কোচবিহার।
অত্যাশ্চর্য গ্রন্থাগার
কিছু দিন আগে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে রায়গঞ্জের ব্লক অফিসে গিয়েছিলাম। অফিস চত্বরে একটি গ্রন্থাগার চোখে পড়ল। নামটা খুবই সুন্দর। ‘উত্তরণ’। খোঁজ নিয়ে জানলাম ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে নির্মিত এই গ্রন্থাগারটির শুভ উদ্বোধন হয়েছিল। দ্বারোদঘাটন করেছিলেন বিশিষ্ট কথা-সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। নানা গ্রন্থের সম্ভারে সাজানো হয়েছিল গ্রন্থাগারটি।
কিন্তু তার পর থেকে আর একদিনের জন্যও গ্রন্থাগারটির দরজা বই প্রেমিকদের জন্য উন্মোচিত হয়নি। বিডিও কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কারও এ ব্যাপারে কোনও মাথাব্যথাও নেই।
উদ্বোধনের পরে আর এক দিনের জন্যেও দরজা খোলেনি রায়গঞ্জের এই গ্রন্থাগারের।—নিজস্ব চিত্র।
পৃথিবীর আর কোনও গ্রন্থাগারের নাম কি পাওয়া যাবে, যার দরজা শুধুমাত্র উদ্বোধনের দিনই খুলেছিল?
সে দিক থেকে রায়গঞ্জের এই ‘উত্তরণ’ যে একটি অত্যাশ্চর্য গ্রন্থাগার, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই গ্রন্থাগারটি কি কোনও দিন পাঠক-পাঠিকাদের জন্য উন্মোচিত হবে না?
গ্রন্থাগারটি অবিলম্বে চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
সামিম আখতার বানু, সোনাবাড়ি, মিরুল, রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর।
আফিম চাষ
ডুয়ার্সে জলঢাকা নদীর পাশে পাখিহাগা (বাগবাড়ি), কেদারহাট (ইন্দুরকুটি) প্রভৃতি এলাকায় অবাধে আফিম চাষ হচ্ছে। দিন দুপুরেই প্রকাশ্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে এই আফিম। এখানকার প্রতিটি গ্রামে, গ্রাম-প্রতিনিধি, পঞ্চায়েত ও পুলিশের লোকজন রয়েছেন। তাঁরা কঠোর নজরদারি চালিয়ে থাকেন, যাতে এ সব গ্রামে কোনও অবৈধ কার্যকলাপ না ঘটে। তাসত্ত্বেও সমগ্র কোচবিহার জেলায় এবং জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ার মহকুমার কিছু কিছু জায়গায় বহিরাগত দুষ্কৃতীরা স্থানীয় মানুষদের টাকার লোভ দেখিয়ে খুব সহজ পদ্ধতিতে আফিম চাষ শুরু করেছিলেন। সেই ধারায় এখনও চলছে আফিম চাষ।
অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিঘা প্রতি যতগুলি গাছ লাগানোর অনুমতি দেওয়া হয়, তার চাইতে বেশি একটিও গাছ লাগাতে পারে না কেউ। কোনও গাছ মারা গেলে প্রশাসনের মাধ্যমে সে তথ্য রেকর্ড করে রাখতে হয়। এ চাষ কেবল মাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই করতে পারেন। অথচ মাথাভাঙ্গা ও ঘোকসাডাঙ্গা থানার নিকটবর্তী এলাকার গ্রামবাসীরা নির্ভয়ে আফিম চাষ করছেন কি করে.? প্রশাসন কি সত্যিই কিছু জানে না? নাকি জেনেও না জানার ভান করছে?
হৈমন্তী ভট্টাচার্য, পাণ্ডাপাড়া, জলপাইগুড়ি।
ট্র্যাফিককে অভিনন্দন
জলপাইগুড়ির তিন নম্বর রেলগুমটির তীব্র যানজট সমস্যা নিয়ে গত ৪০ বছর ধরে এলাকার মানুষ যখন জেরবার এবং এই তীব্র যানজট এড়াতে সর্বস্তরের মানুষ যখন উড়ালপুলের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে সোচ্চার হয়ে উঠছিলেন, তখন অনেকটাই আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির ট্র্যাফিক বিভাগের আধিকারিকরা। সমস্যাটির সমাধান করে তাঁরা প্রমাণও করে দিলেন যে যদি একটু সদিচ্ছা, উদ্যোগ থাকে এবং পথ-চলতি মানুষের একটু সচেতনতা থাকে, তবে সব অসম্ভবই সম্ভব করে তোলা যায়। আজ তিন নম্বর রেলগুমটির সুশৃঙ্খল ট্র্যাফিক ব্যবস্থা দেখে সকলেই বলেন, পুলিশ একটা অসাধ্য সাধন করেছে। সেই সঙ্গে প্রশ্নও উঠছে, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই সমস্যা জিইয়ে রাখা হয়েছিল কেন? সরকারের কি মানুষের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই?
অরবিন্দ কুমার সেন। মহামায়াপাড়া। জলপাইগুড়ি।