মাস খানেক আগে বামফ্রন্ট পরিচালিত আলিপুরদুয়ার পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনাস্থা নিয়ে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সভা ডেকেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় পুরসভায় উন্নয়নের কাজকর্ম নিয়ে দুইপক্ষের বাদানুবাদ শুরু করেছে। বামেদের দাবি, পুর এলাকায় উন্নয়নের জন্য বৈঠক ডেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে দরপত্র ডাকা প্রয়োজন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস বৈঠক করতে না দেওয়ায় পরিষেবার সমস্যা হয়েছে। উল্টোদিকে, তৃণমূলের বক্তব্য, বামবোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। অনাস্থায় বোর্ড ক্ষমতা হারাতে চলেছে। এই অবস্থায় পুর কর্তৃপক্ষ কোনও বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক অধিকার নেই। সমস্ত সিদ্ধান্তই অনাস্থা বৈঠকের পর হবে।
নির্বাচনের পর ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামেরা ৮ টি ও তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস ৬টি করে আসনে জেতে। বোর্ড গঠনের সময় কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা অনুপস্থিত থাকায় বামেরা বোর্ড গঠন করে। পরবর্তীতে কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা দাড়ায় ১২। বোর্ড গঠনের প্রয়োজন ১১ জন কাউন্সিলর। এই অবস্থায় সংখ্যালঘু বোর্ড ক্ষমতা ছাড়তে ছাইছে না বলে দাবি করে আজ, সোমবার শহরে মিছল করার কথাও তৃণমূলের।
তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি তথা কাউন্সিলর আশিষ দত্ত জানান, গত ৩০ জুলাই আমরা বাম বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি। বামেরা প্রায় এক মাস পরে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর বৈঠক ডেকেছে। ওঁদের কাছে পুরসভার ক্ষমতায় থাকার সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই। তার পরেও নানা অছিলায় ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, “ওঁরা বৈঠক করে কিচু দরপত্র ডাকার চেষ্টা করেছেন। আমরা বৈঠকে যোগ দেব না। সংখ্যালঘু বোর্ড কোনও বৈঠক করতে পারে না। বিষয়টি পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরাদ হাকিমকে জানিয়েছি। সোমবার আমরা মিছিল করব।” এই অবস্থায় শহরের নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পুরসভার সিপিএমে চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক। তিনি বলেন, “আমারা পুর আইন মেনে অনাস্থার জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর বৈঠক ডেকেছি। আমারা সকলেই জনপ্রতিনিধি। সবসময় নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু তৃণমূলের জন্য কোনও বৈঠক করা যাচ্ছে না। বহু সিদ্ধান্ত আটকে যাচ্ছে।”
তিনি জানান, পুরসভায় চারটি টাক্টর রয়েছে। যার মধ্যে এটি সেসপুলে ব্যবহার হয়। বাকি তিনটির মধ্যে একটি বিভিন্ন বাজারের ময়লা। তোলে বাকি দুটি ২০টি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে ময়লা তোলে। এক একটি ওয়ার্ডে ৮-৯ দিন পর পর ট্রাক্টর যায়। এতে ময়লা জমে যাচ্ছে। আরও দুটি ট্র্যাক্টর কেনা প্রয়োজন। নিউ টাউনে আলিপুরদুয়ার ভবন তৈরির বিষয়টিও রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের বাধায় কিছু করা যাচ্ছে না। গত ২৯ অগস্টের বোর্ড মিটিংও ভেস্তে গিয়েছে।