আলিপুরদুয়ারে চলছে ফ্লাইওভারের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
আলিপুরদুয়ার জংশন ও আলিপুরদুয়ার পুরসভা এলাকার মধ্যে তৈরী হওয়া উড়ালপুলটি ৭২ ফুট চওড়া করার দাবি তুললেন এলাকাবাসী। আলিপুরদুয়ার শহরের পাশ ঘেঁষে ১ নম্বর অসম গেট লেভেল ক্রসিংয়ে উপর তৈরী হওয়া ওই উড়ালপুল তাঁদের দাবি মত চওড়া করা না হলে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। তাদের সঙ্গে সহমত এলাকার ব্যবসায়ী ও বার অ্যাসোসিয়েশন। প্রয়োজনে রেলের অংশে নির্মাণ কাজ বন্ধ করারও হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে শামুকতলা রোড হয়ে একটি রেল লাইন চলে গিয়েছে অসমে। ওই রুটে মালগাড়ি ও অসমগামী বহু ট্রেন যাতায়াত করে। এর ফলে দিনের অধিকাংশ সময় লেভেল ক্রসিংয়ের গেট নামানো থাকে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাই সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। সম্প্রতি রেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এখানে উড়াল পুল তৈরীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেল লাইনের উপরের অংশে কাজও শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আলিপুরদুয়ার বক্সা ফিডার রোডের উপরে উড়াল পুলের কাজ করার কথা পূর্ত দফতরের। আলিপুরদুয়ার বক্সা ফিডার রোডটি ৭২ ফুট চওড়া। অথচ তার উপরে উড়াল পুল তৈরী হচ্ছে মাত্র ২৪ ফুটের। এতেই আপত্তি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডি আর এম বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কোনও চিঠি এলে তা দেখে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।” তবে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে এই উড়াল পুলটি তৈরীর জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। যার অর্ধেক রাজ্য দেবে। উড়াল পুলটি চওড়া করতে গেলে বাজেট বাড়বে। তৈরী করতে হবে নতুন নকশা।
আলিপুরদুয়ার বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জহর মজুমদার বলেন, “উড়াল পুলটি মাত্র ২৪ ফুট চওড়া হচ্ছে। আমি পূর্তমন্ত্রীর শংকর চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলেছি। পূর্ত দফতর এখনও তাদের অংশের কাজ শুরু করেনি। পূর্তমন্ত্রী জানিয়েছেন, রেল মন্ত্রক যদি তাঁদের অংশ ৭২ ফুট চওড়া করে, তাহলে পূর্ত দফতরও ৭২ ফুট চওড়া উড়াল পুল করবে। বিষয়টি রেলমন্ত্রী, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান, ও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার ও আলিপুরদুয়ারের ডি আর এমকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে। যদি তারা বিষয়টি নিয়ে এক মাসের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে আমারা উড়ালপুল নির্মাণস্থলের কাছে অবস্থানে বসব। প্রয়োজনে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হবে।
এলাকার ব্যবসায়ী রণজি পোদ্দার বলেন, “কথা ছিল উড়াল পুলটি পিলারের মাধ্যমে উঁচু হবে। তবে এখন আমরা জানতে পারছি গার্ড ওয়াল তুলে উঠবে উড়াল পুল। এতে নীচের থাকা দোকানদাররা বিপাকে পড়বেন। আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার বাসিন্দা নবীন চৌধুরি বলেন, “রাস্তা ৭২ ফুট চওড়া আর উড়াল পুল যদি ২৪ ফুট হয় তাহলে যানজটের সৃষ্টি হবে।”
আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “উড়ালপুল সম্প্রসারণের বিষয়টি উদ্যোগ নিয়ে রেলকে জানানো উচিত পূর্ত দফতরের। তাতে বিষয়টি অনেকটাই সহজ হবে।”