এনজেপিতে ট্রেনের টিকিটে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ

দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরার টিকিটে নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে কয়েকজন রেলকর্মী ওই ভাবে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালেও এক যাত্রীর কাছ থেকে দু’বার নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৪০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে বলে ওই যাত্রী অভিযোগ করেন।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরার টিকিটে নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে কয়েকজন রেলকর্মী ওই ভাবে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। রবিবার রাতে ও সোমবার সকালেও এক যাত্রীর কাছ থেকে দু’বার নির্ধারিত ভাড়া থেকে ৪০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে বলে ওই যাত্রী অভিযোগ করেন। পরে নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় ওই ব্যক্তি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের চিফ টিকিট ইন্সপেক্টর হায়াবুল শেখের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁর নির্দেশে শেষ পর্যন্ত ওই যাত্রী রুবেল মাঝিকে অতিরিক্ত ভাড়া ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

এ দিন ঘটনাটি সামনে এলেও রেলের কমার্শিয়াল বিভাগের এক শ্রেণির কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই এই কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। এতে রেলের পদস্থ কর্মীদের একাংশেরও মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুন কুমার শর্মা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাকে কেউ এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ জানায়নি। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ রকম হওয়া উচিত হয়নি।”

রবিবার ময়নাগুড়ির বাসিন্দা রুবেল মাঝি ও তাঁর তিন বন্ধু রবিবার রাতে বিবেক এক্সপ্রেসে ত্রিবান্দ্রম যাওয়ার জন্য সাধারণ টিকিট কাটেন। টিকিটে লেখা মূল্য ৪৮০ টাকা। তিনি চারজনের জন্য ১ হাজার ৯২০ টাকা হিসেবে ২ হাজার টাকা দেন। কর্তব্যরত ওই কর্মী তাঁর কাছে আরও ৮০ টাকা দাবি করেন। তিনি কারণ জানতে চাইলে তাঁকে এটাই দূরপাল্লার ক্ষেত্রে নিয়ম বলে জানান।

Advertisement

রুবেলবাবু বলেন, “আমি প্রতিবাদ করলে উনি টিকিট দেওয়া যাবে না বলে জানান। বেশ কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি হলে আমি টিকিট না কেটেই ফিরে আসি। এ দিন সকালে ফের গৌহাটি-ব্যাঙ্গালোর এক্সপ্রেসে যাওয়ার জন্য তিনি টিকিট কাটেন। এ বারও ৪০ টাকা করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি নেওয়া হয়। তিনি ও বাকিরা যাত্রী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দীপক মহান্তির সাহায্য চান। দীপকবাবুর সাহায্যে তাঁরা চিফ টিকিট অফিসারকে অভিযোগ জানালে তিনি তখনই অতিরিক্ত ভাড়া ফিরিয়ে দেন। হায়াবুলবাবু বলেন, “অনেকদিন ধরে হচ্ছে কি না তা জানা নেই। তবে এ দিন অভিযোগ পেয়ে আমি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে।”

যদিও মাত্র কয়েকদিন আগেই একই ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রথীন অধিকারী ও মোহন রায় নামে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে এনজেপি-চেন্নাই এক্সপ্রেসের টিকিটের উপর একইভাবে বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, “মাঝে মধ্যেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা একাধিকবার স্টেশন ম্যানেজারকে জানিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। এই কাজে রেলের এক শ্রেণির কর্মী জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ যাত্রীদের অনেকেরই।” তবে সবার কাছ থেকে এই বর্ধিত টাকা নেওয়া হয় না বলেও জানা গিয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির লোকের কাছ থেকেই এই অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। যদিও স্টেশন ম্যানেজার অজিতেশ দাস বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। তবে আমার কাছে আজ পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন