কালচিনির একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কংগ্রেস নেতা মোহন শর্মা। বৃহস্পতি বার দুপুরে কালচিনি থানা মাঠে এক অনুষ্ঠানে ওই দলবদল হয়। অনুষ্ঠানে পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী, বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী দলত্যাগীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। কালচিনির প্রাক্তন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সদস্য মোহনবাবু দলত্যাগের কথা ঘোষণা করলেও এ দিন তৃণমূলের দলীয় পতাকা হাতে নেননি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ জুলাই কলকাতার শহিদ দিবসের মঞ্চে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত থেকেই তিনি পতাকা তুলে নেবেন।
এ দিন মোহনবাবু ছাড়াও কালচিনি ব্লকের কংগ্রেসের এক জেলা পরিষদ সদস্য, কংগ্রেসের ২০ জন, আরএসপির ১ জন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য, ৫৫ জন কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সিপিএম, আরএসপি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এক জন করে পঞ্চায়েত সদস্যও তৃণমূলে গিয়েছেন। মোহনবাবু বলেন, “কালচিনি ব্লকের উন্নয়নের স্বার্থেই কংগ্রেস ছাড়লাম। চা বাগান, বনবস্তির ও এলাকার উন্নয়নের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। কংগ্রেসে থেকে তা সম্ভব হচ্ছিল না। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
কালচিনি পঞ্চায়েত সমিতির ২১ জনের মধ্যে ২০ জন ও আরএসপির ১ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ৩১ সদস্যের পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ২৬। ব্লকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য ছিল ৬৯ জন। তার মধ্যে বেশ কলয়েকজন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এদিন ৫৫ জন কংগ্রেসের সদস্য সহ ৫৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে গিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়াও এদিন দলবলের পর মেন্দাবাড়ি, লতাবাড়ি, গারোপাড়া ও জয়গাঁ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গেল। ব্লকে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল-দখলে থাকল ৬টি পঞ্চায়েত।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “মোহনবাবুকে শুধু কালচিনি ব্লক নয়, তরাই ডুয়ার্স ও পাহাড়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান। কংগ্রেস কার্যত ওই ব্লক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। আগামী দিনে অন্য দল থেকেও তৃণমূলে জনপ্রতিনিধিরা যোগ দেবেন।” অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতা জহর মজুমদার, জোয়াকিম বাক্সলা, উইলসন চম্প্রামারি উপস্থিত ছিলেন।
দলত্যাগীরা ক্ষমতা এবং টাকা লোভে এ দিন দল ছেড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা বিশ্বরঞ্জন সরকার। তিনি বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটে কালচিনিতে মানুষ ওই ব্লকে কংগ্রেসকে বিপুলভাবে জয়ী করেছিল। এখন ক্ষমতা ও টাকার লোভে অনেকে দল ছাড়ছেন। আগামী দিনে মানুষ এর জবাব দেবে।”