কোচবিহার পুরসভার সামনে ভিড়।
প্রয়াত পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর দীপক ভট্টাচার্যের হাতেই কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তুলে দিলেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। বুধবার পুরসভার কনফারেন্স হলে মহকুমাশাসক বিকাশ সাহার উপস্থিতিতে বোর্ড মিটিঙে চেয়ারম্যান হিসেবে দীপকবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৃণমূলের ১৪ জন কাউন্সিলর তো বটেই, বামেদের পাঁচ জন কাউন্সিলররও দীপকবাবুকে সমর্থন করেন। সর্বসম্মতিক্রমেই দীপকবাবু চেয়ারম্যান হন। মহকুমাশাসক বলেন, “সব কাউন্সিলরের সমর্থনে দীপকবাবু চেয়ারম্যান হয়েছেন।”
দলীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালেই দলীয় কার্যালয়ে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেখানে তিনি জানান, দলের চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী দীপকবাবুকে দলের কাউন্সিলরদের সমর্থন করতে হবে। চেয়ারম্যান ঘোষণা হওয়ার পরে রবীন্দ্রনাথবাবু প্রয়াত বীরেনবাবু ছেলে শুভজিৎবাবুকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভায় যান। তিনি বলেন, “চেয়ারম্যান হিসেবে দীপকবাবু বীরেন কুণ্ডুর উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।” নতুন চেয়ারম্যান দীপকবাবু বলেন, “বীরেনবাবুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করাই আমার লক্ষ্য। জল প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করব। শহরের মানুষ যাতে পরিষেবা পান, সেদিকে নজর রাখব।”
নতুন চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্য।
পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চেয়ারম্যান থাকা অবস্থাতেই অসুস্থ হয়ে মারা যান বীরেন কুণ্ডুু। সেই সময় থেকেই পুরসভার পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠে। পুর আইন মেনে উপ-পুরপ্রধান আমিনা আহমেদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে গেলে বীরেন কুণ্ডুর অনুগামীরা বাধা দেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ নামে। সেই সময়ে বীরেনবাবুর অনুগামীদের দাবি ছিল, দীপকবাবুকে চেয়ারম্যান করা হোক। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বীরেনবাবুদের অনুগামীদের পক্ষেই ছিলেন। পাল্টা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি আমিনা আহমেদকেও চেয়ারম্যান করার দাবি উঠতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়। এদিন অবশ্য সবাই দীপকবাবুকেই মেনে নেন। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ গোষ্ঠীর সমর্থকেরা সকাল থেকেই পুরসভার সামনে ভিড় করেন। পুরসভার সামনে পুলিশও মোতায়েন করা হয়।
চেয়ারম্যান নির্বাচন পর্ব শুরু হয় সাড়ে ১২ টা নাগাদ। তৃণমূলের এক কাউন্সিলর দীপক ভট্টাচার্যের নাম চেয়ারম্যান হিসেবে প্রস্তাব করেন। ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা আহমেদ-সহ বাকি ১৩ জন তৃণমূল কাউন্সির ওই প্রস্তাব সমর্থন করেন। পরে পাঁচ জন বাম কাউন্সির ওই প্রস্তাব সমর্থন করে দেন। আমিনা আহমেদ বলেন, “দলের নির্দেশ মেনেই দীপকবাবুকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে।” বামেদের পক্ষে পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, “চেয়ারম্যান হিসেবে একজনের নামই প্রস্তাব করা হয়। আর আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম ভোটে লড়ছি না। তাই দীপবাবুকে সমর্থন করেছি। তবে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভোটাভুটি হলে আমরা সমর্থনে বিরত থাকতাম।”
—নিজস্ব চিত্র।