কানু সান্যালের বাড়িতে দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। —নিজস্ব চিত্র।
প্রয়াত নকশাল নেতা কানু সান্যালের গ্রাম হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতকে আদর্শ গ্রাম প্রকল্পের অধীনে অধিগ্রহণ করলেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া।
শুক্রবার শিলিগুড়ি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের নকশালবাড়ি ব্লকের এই গ্রামকে অধিগ্রহণ করেন তিনি। এদিন হাতিঘিষাতে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনি সরকারিভাবে তা ঘোষণা করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে জেলা শাসক পুনীত যাদব এবং ও মহকুমা শাসক দীপাপ প্রিয়ার অনুপস্থিতি নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন, পাহাড়ের দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম চাওয়া হলেও জেলাশাসক তা না দেওয়ায়। যদিও জেলাশাসক অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানের পর তিনি যান, নকশাল আন্দোলনের সূত্রপাত যেখান থেকে, সেই নকশাল কার্যালয়েও। হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতের সেপদুল্লাজোত। এখানেই কানুবাবু শেষ জীবন কাটিয়েছেন। কথা বলেন কানুবাবুর এক সময়ের ছায়াসঙ্গী শান্তি মুণ্ডার সঙ্গেও।
সাংসদ অহলুওয়ালিয়া বলেন, “নকশালবাড়ির একটা ঐতিহ্য রয়েছে। আমার ছাত্র জীবন থেকে নকশাল, কানু সান্যালদের নাম শুনেছি। তাই আমার সংসদ এলাকার মধ্যে তাঁর গ্রাম থাকায় সেটা বেছে নিয়েছি। এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে রূপায়ণের চেষ্টা করা হবে। ২০১৬ সালের মধ্যে একে আদর্শ গ্রাম হিসেবে তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, “কেন্দ্র সরকার থেকে মানুষের উন্নতির জন্য যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তাতে সবার অংশ নেওয়া উচিত। তবে তাতে যোগ না দিলে উন্নয়ন আটকে থাকবে না। জেলাশাসক সহযোগিতা করেননি।” যদিও দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি চিঠি পেয়েছিলাম। কিন্তু একটি বিশেষ বৈঠকে আটকে পড়ায় যেতে পারিনি। মহকুমাশাসকও শিলিগুড়িতে একটি বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। সাংসদ কোনও আলোচনা করেননি। তা হলে অন্যদিন অনুষ্ঠান করার অনুরোধ করতাম। বিডিও তো ছিলেন।”
এ দিন অহলুওয়ালিয়া নকশাল কার্যালয়ে যান। সেখানে কানুবাবুর থাকার ঘরটি ঘুরে দেখেন। কানুবাবুর ছায়াসঙ্গী শান্তিদেবীকে নিজের কার্ড দিয়ে কোনও দরকার হলে যোগাযোগ করতে বলেন। এখানে উন্নয়ন করতে এসেছেন বলে জানান। শান্তিদেবী অবশ্য বলেন, “এর আগে অনেক উন্নয়নের কথা শুনেছি। আগে হোক তারপর বলব।”
গত ১১ অক্টোবর ২০১৪ তে এই প্রকল্প চালু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিটি কেন্দ্রীয় সাংসদকে নিজের সংসদ এলাকার একটি করে গ্রাম পঞ্চায়েতকে অধিগ্রহণ করে তাঁর উন্নয়ন ঘটানোই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। তিনি জানান এত বছর লরেও এখানে তিন হাজার বাড়িতে শৌচাগার নেই, ১৩৭ টা নলকূপ রয়েছে ২১ হাজার লোকের জন্য। কয়েক মাস, আগে পর্যন্ত নদীর জল খেয়ে দিন কাটাতে হত তাঁদের। বহু লোকের বিপিএল তালিকায় নাম নেঅই। বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছে না।