এ বছরেই ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের রাজ্য কমিশনের সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু হতে পারে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি এবং আসানসোলে ক্রেতা সুরক্ষার রাজ্য কমিশনের খন্ডপীঠ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। শিলিগুড়িতে বেঞ্চের কাজ শুরু হয়ে গেলে, জেলা ক্রেতা সুরক্ষার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের জন্য উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের কলকাতায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সাধারণ ক্রেতার জন্য আইনি কবচ থাকলেও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার কারণে অনেকেই আইনের সাহায্য নিতে চান না। কর্তাদের অভিজ্ঞতা, জেলা আদালতে কোনও রায় হওয়ার পরে সিংহভাগ ক্ষেত্রে দফতরের রাজ্য কমিশনে মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য যায়। একবার জেলা ক্রেতা আদালতে মামলা দায়েরের পরে, ফের কলকাতায় গিয়ে থেকে রাজ্য কমিশনে অনেকেই আবেদনে আগ্রহী হন না। সে কারণেই শিলিগুড়ি এবং আসানসোলে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত তথা রাজ্য কমিশনের সার্কিট বেঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতর। শিলিগুড়ির বেঞ্চে মালদহ, দুই দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং দার্জিলিং জেলার বাসিন্দারা আবেদন জানাতে পারবেন।
রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, “দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির জন্য শিলিগুড়ি এবং আসানসোলে রাজ্য কমিশনের সার্কিট বেঞ্চ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিলিগুড়িতে জমি খোঁজা শুরু হয়েছে। চলতি বছরেই বেঞ্চের কাজ শুরু করে দিতে চাইছি।” মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য কমিশনে অন্তত ৪০ হাজার মামলা রয়েছে। রাজ্যে দু’টি সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু হলে, ওই বেঞ্চের আওতাধীন জেলাগুলির মামলা কলকাতা থেকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে চলে আসবে বলে জানা গিয়েছে। সে কারণেই দ্রুত শুনানি সেরে মামলাগুলি নিষ্পত্তি সম্ভব বলে আশা দফতরের আধিকারিকদের।
শিলিগুড়ির এই বেঞ্চের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে অর্থ দফতরের প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। তহে অর্থ দফতর থেকে চূড়ান্ত মঞ্জুরী পাওয়ার পরেই বেঞ্চ চালুর নথিপত্র প্রস্তুত করবে দফতর। এক মাসের মধ্যেই সেই সব আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলা সম্ভব হবে বলে আধিকারিকরা আশাবাদী। আর সেই প্রক্রিয়া শুরুর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে শিলিগুড়ি শহরে ‘কনজিউমার অ্যাসিস্টেন্ট বুথ’ বা গ্রাহক সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুরে এই কেন্দ্র চালু হবে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কেন্দ্রে গেলে নিখরচায় আইনজীবীর পরামর্শ যেমন পাওয়া যাবে, তেমনই কী ভাবে মামলা দায়ের করতে হবে, কোন নথি দাখিল করতে তা সে সব খুঁটিনাটি বিষয়েও জানানো হবে। কেন্দ্রগুলিকে আধুনিক পরিকাঠামো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে। সার্কিট বেঞ্চের কথা মাথায় রেখে শিলিগুড়ি শহরে সহায়তাকেন্দ্র তৈরি হতে চলেছে। মন্ত্রীর কথায়, “ক্রেতাদের সুরক্ষাকবচ দিতে পরিকাঠামো শক্তিশালী করা হচ্ছে। সার্কিট বেঞ্চে যেমন দ্রুত বিচার মিলবে, তেমনিই সহায়তা কেন্দ্র থেকে দুঃস্থরাও সাহায্য পাবেন।”