তৃণমূল বিধায়কের দাক্ষিণ্যে দু’বার রাজ্য সরকার থেকে ক্লাবটি দু’ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য পেয়েছিল। ক্লাব সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূলের গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ নন্দী সেই আর্থিক সহায়তার কথা স্বীকারও করেছেন। সেই ক্লাবের মধ্যেই নিয়ম করে জুয়ার আসর চলছিল বলে অভিযোগ ওঠায় তৃণমূল শিবিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বালুরঘাটের পতিরাম এলাকার ওই ক্লাবে হানা দিয়ে পুলিশ, জুয়ার আসর থেকে সাত তূণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করার পরই এলাকার বাসিন্দারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। সরব হয়েছে বিরোধীরাও। এদিন বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করেন, প্রতিদিন অনেক রাত পর্যন্ত ওই ক্লাবে আলো জ্বলতে দেখা যেত। সন্ধ্যের পর এলাকার বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীও ওই ক্লাবে ঢুকতেন। জুয়া খেলা আসর বসতো বলেও বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য হীরেন সাহার অভিযোগ, জুয়া খেলার অভিযোগে ধৃতদের মধ্যে অনেকেই গ্রামস্তরের নেতা। তাঁর অভিযোগ, শাসক দলের নেতা বিধায়কদের আনাগোনা থাকায় ক্লাবের ওই অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেতেন না। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদাই ওই ক্লাবের পৃষ্ঠপোষক। বাচ্চু হাঁসদা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এক সময় ওই ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওদের কাজকর্ম দেখে গতবছর লক্ষীপুজোর পর থেকে আমি সরে আসি ।এক বছর ধরেই ওই ক্লাবের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।”
বৃহস্পতিবার রাতে ডিএসপি(সদর) উত্তম ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাতে আচমকা পতিরামের ওই ক্লাবে হানা দিয়ে জুয়ার আসর থেকে ৩২ হাজার টাকা সহ সাত জনকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। পতিরামের ওই ক্লাবের সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপবাবুর বক্তব্য, রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত তাদের ক্লাব, নানা ধরণের সমাজসেবা ও খেলাধূলার সঙ্গে যুক্ত। বৃহস্পতিবার পতিরামে হাট ছিল। ক্লাব সদস্য ব্যবসায়ীরা হাটে বেচাকেনা সেরে ক্লাবে আড্ডা মারছিলেন। ওই সময় পুলিশ তাদের অহেতুক ধরে নিয়ে যায়। তবে এ ব্যাপারে তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করবেননা বলেও জানিয়েছেন। যদিও ঘটনার পরই তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেছেন, “অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্ত দলের কোনও সদস্য-ও কর্মীর পাশে দাঁড়াবে না দল। আইনের পথেই তাদের বিচার হবে।”