উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের নয়া বোর্ড গঠন হওয়ার পর একমাস পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী সমিতির নতুন কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়নি। তাই গত চার মাস ধরে জেলার সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার জেলা পরিষদের নতুন বোর্ড গঠনের একমাস পূর্তি হয়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, অনাস্থা ও দলবদলের জেরে গত ২০ অক্টোবর তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্টের কাছ থেকে জেলা পরিষদের ক্ষমতা ছিনিয়ে নিলেও পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী বিদায়ী জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন সদস্যরা এখনও পর্যন্ত অনাস্থা পেশ করেনি। তাই কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন আটকে রয়েছে। জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করার পর একমাস পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূল সদস্যরা কেন বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
এদিন জেলা পরিষদে সভাধিপতি আলেমা নুরি ও সহকারি সভাধিপতি পূর্ণেন্দু দে সহ তৃণমূলের একাধিক সদস্য হাজির ছিলেন। তাঁরা চালু থাকা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বিষয়ে তদারকি করলেও কর্মাধ্যক্ষ না থাকায় নতুন কাজ চালুর বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারেননি। জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে বলেন, “বিদায়ী বোর্ডের কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ না হলে জেলা প্রশাসন জেলা পরিষদের ১০টি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের নির্দেশিকা জারি করতে পারে না।” বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে কবে অনাস্থা পেশ করা হবে, সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি সভাধিপতি আলেমা নুরি।
সহকারি সভাধিপতি পূর্ণেন্দুবাবু জানান, জেলা পরিষদের সদস্যদের পাশাপাশি জেলার সাংসদ, বিধায়ক ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের ভোটে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়। বর্তমানে লোকসভার অধিবেশন জারি থাকায় সাংসদরা ব্যস্ত। তাঁরা কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে ভোট দিতে আসতে পারবেন না বলেই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, “১ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের দলীয় সদস্যরা সাধারণ বৈঠক করে অনাস্থা পেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জেলা পরিষদে মোট ১০টি স্থায়ী সমিতি রয়েছে। একাধিক কর্মাধ্যক্ষের অনুপস্থিতি, দলবদল, অনাস্থা ও তলবি সভার জেরে গত প্রায় চার মাস ধরে জেলা পরিষদের তহবিলে কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের ৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। ওই টাকা দিয়ে জেলার ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাকা রাস্তা, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি হওয়ার কথা। কর্মাধ্যক্ষদের অনুপস্থিতির জেরে বোর্ড মিটিংয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের অভাবে সেই কাজ আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ।